Cvoice24.com


নগরের আইন শৃংখলা পরিস্থিতি অতীতের তুলনায় এখন অনেক ভালো- সিএমপি কমিশনার

প্রকাশিত: ১৪:৩৩, ১৯ আগস্ট ২০১৯
নগরের আইন শৃংখলা পরিস্থিতি অতীতের তুলনায় এখন অনেক ভালো- সিএমপি কমিশনার

সিএমপি কমিশনার মো. মাহবুবর রহমান। ছবি: আকমাল হোসেন।

নগরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি ভালো। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা যে ঘটছে না তা নয়। তবে প্রতিটি ঘটনাতেই পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে।

সম্প্রতি সিভয়েসকে দেয়া একান্ত এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মাহবুবর রহমান। 

অপরাধ মুক্ত সমাজ সকলেই প্রত্যাশা করে তবে এটা বাস্তবায়ন করা বেশ কঠিন কাজ। পুলিশের একার পক্ষে এই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে সমাজের সবার সমন্বিত প্রচেষ্টা খুব জরুরী বলে মনে করেন তিনি।

অপরাধ প্রবণতা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি মন্তব্য করে তিনি বলেন, পৃথিবীতে যখন মাত্র ৬ জন মানুষ ছিলেন তখনও একটা হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। অপরাধ প্রবণতা মানুষের সহজাত অভ্যাস। এখানে পুলিশের আগে থেকে কোন ভূমিকা রাখার সুযোগ নেই। তবে ধর্মীয় ও সামাজিক অনুশাসনের দ্বারা এসবের পরিমাণ অনেক কমিয়ে আনা যেতে পারে। তাই অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি এ ধরণের সচেতনামূলক কাজেও আমরা মনযোগ দিচ্ছি। চট্টগ্রামের সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাথে নিয়ে আমরা বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।

মাদক নির্মূল করতে পারলে অপরাধের সংখ্যা অনেকাংশে কমে যাবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বেশিরভাগ অপরাধ প্রবণতার সাথেই মাদকের একটা সম্পর্ক রয়েছে। আমরা মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান দেখাচ্ছি। এর সুফলও মিলছে। কিন্তু এখানে আমাদের আরো সফলতা দরকার। পাশাপাশি সমাজের অন্য সবাইকেও মাদকের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ কঠোর হতে হবে। যেমন আমরা যদি চিন্তা করি আমার সন্তানকে মাদকের আওতামুক্ত রাখতে আমি কি ব্যবস্থা নিব এবং সেটা যদি আমার কর্মক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করি। একজন আইনজীবী যদি ভাবেন তিনি কোনভাবেই একজন মাদক ব্যবসায়ীর জামিনের জন্য দাঁড়াবেন না, একজন সাংবাদিক যদি সিদ্ধান্ত নেন কোন মাদক ব্যবসায়ীর পক্ষে তিনি কলম ধরবেন না তাহলেই সামাজিকভাবে সবার প্রচেষ্টায় এই সমস্যার হাত থেকে মুক্তি মিলবে। 

সাধারণ মানুষের সাথে পুলিশের দূরত্ব আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের চাকরীর ধরণ অন্য বাহিনীর চাইতে আলাদা। পুলিশ অনেক বেশি সিভিল ফোর্স, একেবারে সাধারণ মানুষের সাথে পুলিশের উঠাবসা। স্বাভাবিক কারণেই পুলিশের উপর মানুষের অনেক বেশি প্রত্যাশা। তবে সে সব প্রত্যাশা পূরণের মত অবস্থায় আমরা কখনোই ছিলাম না। এখনো আসতে পারিনি। তারপরও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আমরা সফল। ব্যর্থতা কিছু রয়েছে। এসব কারণে মানুষের মধ্যে একটা বদ্ধমূল ধারণা আগে থেকেই জন্মে গেছে যে পুলিশের কাছে গেলে ন্যায় বিচার পাওয়া যাবে না। অনেক সময় কেউ হয়তো পুলিশের কাছে যায়নি কখনো। কিন্তু সে ঐ ধারণা নিয়েই বাস করে। কিন্তু যারা আসে তাদের অভিজ্ঞতা ভিন্ন। অন্য সরকারি অফিসে সাধারণ মানুষ যে সেবা পায় পুলিশের কাছে তার চেয়ে বেশি সেবা পাওয়া যায়। তারপরও মানুষের যে বদ্ধমূল ভুল ধারণা সেটা পরিবর্তন করে সাধারণ মানুষ ও পুলিশের মধ্যকার দূরত্ব কমিয়ে আনার জন্য আমরা কাজ করছি। 

এই লক্ষ্যে নিজের গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগের বিষয়ে সিএমপি কমিশনার বলেন, আমি সবসময় ভাবি আমার গ্রামের স্থানীয় থানায় আমার বাবা মা, ভাই বোন গেলে যে ধরণের আচরণ তারা প্রত্যাশা করে সেই আচরণটুকু আমি আমার কর্মক্ষেত্রের থানাগুলোতে নিশ্চিত করবো। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমি কাজ করি। তারপরও মানুষের মধ্যে থাকা বদ্ধমূল ধারণার কারণে অনেক সময় মানুষ থানায় আসে না। এজন্য আমরা ঠিক করেছি পুলিশই মানুষের কাছে যাবে। আমরা হ্যালো ওসি নামে একটা কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। যেসব জায়গায় পুলিশ কখনো যায়নি সেসব জায়গাতে এবার পুলিশ যাবে। থানার ওসি নিজে গিয়ে ঐসব এলাকার মানুষের অভিযোগ শুনবেন। সেসব সমাধানের উদ্যোগ নিবেন।

সিভয়েস/এএস

আবু রায়হান তানিন

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়