Cvoice24.com


ফটিকছড়ির চেঙ্গরকুল ব্রিজ, দুর্ভোগ লাগবে দ্রুত সংস্কার দাবি

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ১৮ আগস্ট ২০১৯
ফটিকছড়ির চেঙ্গরকুল ব্রিজ, দুর্ভোগ লাগবে দ্রুত সংস্কার দাবি

 চেঙ্গরকুল ভাঙা ব্রিজ ও স্থানীয়দের নির্মিত কাঠের ব্রিজ

ফটিকছড়ি বিবিরহাট-চেঙ্গরকুল-কাঞ্চন নগর সড়কের  চেঙ্গরকুল ব্রিজটি দীর্ঘদিন যাবৎ সংস্কারহীন অবস্থায় পড়ে থাকায় যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এলাকাবাসী।
উপজেলা সদর থেকে কাঞ্চন নগর হয়ে লক্ষীছড়ি উপজেলা সদরে পৌঁছানোর অন্যতম সড়ক "বিবিরহাট-চেঙ্গরকুল-কাঞ্চন নগর সড়ক"। যাতায়াতের প্রধানতম এ সড়কের ব্যবস্থা চেঙ্গরকুলে প্রায় তিন যুগ আগে নির্মিত ব্রিজটি ভেঙে যান চলাচল দীর্ঘদিন বন্ধ। ব্রীজটি দ্রুত নির্মাণের দাবি দুই উপজেলার মানুষের।

সরেজমিনে গেলে এলাকাবাসী জানায়, চেঙ্গলকুল ব্রিজটি ভেঙে গেছে  দুই বছরেরও বেশি সময় আগে। পাশে স্থানীয়রা চলাচলের জন্য একটি গাছের তৈরি ব্রিজ নির্মাণ করেছে। সেটির উপর দিয়ে কোন রকমে রিকশা মোটরসাইকেল ও সিএনজি ট্যাক্সি  চলাচল করছে। 

কাঞ্চননগর ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. আলমগীর নিশান জানান, রবি শস্যভাণ্ডার খ্যাত কাঞ্চন নগরের চেঙ্গরকুলের বেগুন-মুলার  সুনাম দেশজুড়ে। ব্যাপক ধানও চাষ হয় এখানে। এই অঞ্চলের ৮০% লোক কৃষিজীবী।
কিন্তু চেঙ্গরকুল ব্রিজ ভাঙা থাকার কারণে খাদ্য-শস্য
ও সার-বীজ বহনকারী গাড়ি চলাচল না করার কারণে কৃষকদের ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

কাঞ্চন নগরের বাসিন্দা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা তাসলিমা আকতার ও জোবাইদা আকতার জানান, প্রতিদিন নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে এই রাস্তা দিয়ে হাজারো মানুষ যাতায়াত করে থাকে। আগে যে রাস্তা দিয়ে কাঞ্চন নগর থেকে বিবিরহাট আসতে সময় লাগতো ১৫ মিনিট আর এখন সময় লাগছে এক ঘণ্টা।  স্কুল কলেজ মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সময়ের অপচয় হচ্ছে।  গাড়ি ভাড়াও বেশি খরচ হচ্ছে। তাই চেঙ্গরকুল ব্রিজটি দ্রুত নির্মাণ ও ভাঙা সড়কটি সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে।

মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম জানান, ব্রিজটি ভাঙার পর থেকে উপজেলা সদর থেকে রাত বিরাতে এই সড়ককে চলাচল করতে ভয় করে। কারণ সেখানে উৎপেতে থাকে ছিনতাইকারী ও ডাকাত। বাড়ি ফিরার পথে তারা সব হাতিয়ে নেয়। কিছুদিন পূর্বে এই স্থানে এক মুক্তিযোদ্ধাসহ ৮/১০ ব্যক্তি ছিনতাইয়ের শিকার  এবং তারা দুর্বৃত্তদের আঘাতে রক্তাক্ত হন। ডাকাতের কবলে পড়ে এক ডেকোরেশন ব্যবসায়ীও খুন হয়। ব্রিজটি ঠিক থাকলে এবং সড়কে নিয়মিত যান চলাচল করলে এসব ক্ষতি সাধন বন্ধ হতো।

ফটিকছড়ি পৌরসভার কাউন্সিলর মো. রফিকুল আলম জানান, চেঙ্গরকুল সড়ক হয়ে পৌরসভার আদর্শ গ্রাম ও কাঞ্চন নগর ইউনিয়নের বেশিরভাগ মানুষ ফটিকছড়ি ২০ শস্যা হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসে। রাত বিরাতে হৃদরোগ আক্রান্ত এবং গর্ভবতী মহিলা নিয়ে আসতে খুব কষ্ট হয়।  সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে দ্রুত ভাঙা সড়ক নির্মাণ ও ভাঙা ব্রিজটি নতুন করে নির্মাণ করা দরকার।

কাঞ্চন নগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. রশিদ উদ্দিন চৌধুরী কাতেব বলেন, চেঙ্গরকুল ব্রিজটি এখন ফটিকছড়ির দুঃখ। এই সড়কে ২/৩ কিলোমিটার পর্যন্ত কার্পেটিং এবং ব্রিজটি নির্মাণ করতে সরকারের দপ্তরে দপ্তরে ঘুরছি। এটার টেন্ডার হওয়ার মৌখিক খবর পেলে দাপ্তরিক কোন খবর পাইনি। এ ব্যাপারে এলজিইডি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি।

ফটিকছড়ি উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী জহুরুল হক বলেন, এই সড়কের ভুক্তভোগীরা  জানতে চাইছে কখন কাজগুলো শুরু করবো। চেঙ্গরকুল ব্রিজটির জন্য প্রায় ২ কোটি ৩২ লক্ষ টাকার প্রাক্কলন পাঠানো হয়েছে। সেটি টেন্ডার হয়েছে বলে মৌখিক শুনেছি। সেখানে ২ কিলোমিটার সড়কও কার্পেটিং এর জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে ওয়ার্ক অর্ডারসহ দাপ্তরিক চিঠি পাইনি।

সিভয়েস/আই

 

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ফটিকছড়ি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়