Cvoice24.com


পর্যটকের পদভারে মুখরিত কক্সবাজার

প্রকাশিত: ১২:৩১, ১৫ আগস্ট ২০১৯
পর্যটকের পদভারে মুখরিত কক্সবাজার

ছবি-প্রতিনিধি

ঈদের ছুটিতে পর্যটকের পদভারে মুখরিত কক্সবাজার। ছুটির ৪র্থ দিনেও লাখো পর্যটকের ভিড় দেখা যায় সমুদ্র সৈকতের বালিয়াড়িতে। সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও সাগরের নীল জলরাশিতে উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগে পিছিয়ে নেই পর্যটকরা। সমুদ্রের পাড় ছাড়াও বিভিন্ন দর্শনীয় স্পটগুলোতেও পর্যটকের কমতি নেই।

এদিকে পর্যটকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, জেলা পুলিশ, আনসার ও লাইফগার্ড কর্মীরা।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও ঈদের ছুটি আনন্দময় করে কাটাতে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে ভিড় করছে লাখো পর্যটক। সাগর আর পাহাড়ের মিতালীসহ প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্য্য উপভোগ করছেন আগত পর্যটকরা। বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে ঈদের পরদিন থেকে সৈকতের সব পয়েন্টে যেন পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। সমুদ্র সৈকত ছাড়াও দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, রামুর বৌদ্ধ মন্দিরসহ পর্যটন স্পটগুলো মুখরিত পর্যটকের পদভারে।

হোটেল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পর্যটন নগরীতে থাকা পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউস আর কটেজগুলোতে ৩ লক্ষাধিক পর্যটকের ধারন ক্ষমতা রয়েছে। ইতিমধ্যে ৮০ শতাংশ বুকিং হয়ে গেছে।

যান্ত্রিক জীবনকে ভুলে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত পাড়ে এসে আনন্দিত পর্যটকেরা। তারা বলছেন, কক্সবাজার না আসলে বুঝা যাবেনা এই জায়গা কত সুন্দর।

ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা সাইমা আহম্মেদ জানান, তিনি ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে এই প্রথম কক্সবাজার বেড়াতে এসেছেন। এতদিন তিনি জানতেন এখানে শুধু সমুদ্র সৈকতই দেখার মত রয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই পর্যটন নগরীতে দেখার মত আরো অনেক কিছু রয়েছে। তার মন কেড়েছে দরিয়া নগর, হিমছড়ি এবং ইনানীর পাথুরে বিচ।

কুমিল্লা থেকে বেড়াতে আসা নব দম্পতি নুপুর এবং বাপ্পী কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতের নিরাপত্তা দেখে খুবই সন্তুষ্ট। চাঁদের আলোতে গত রাতে একটা পর্যন্ত সমুদ্র সৈকতে কাটানো সময়টি তার কাছে ছিল খুবই মধুর। রাতে সমুদ্র সৈকতের পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা এবং ট্যুরিস্ট পুলিশের টহলের মাধ্যমে নিরাপত্তা জোরদার দেখে নিজেদের খুবই নিরাপদ মনে হয়েছে।

পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবা নিশ্চিতের ব্যাপারে পুলিশ সুপার (ট্যুরিস্ট পুলিশ) মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান জানান, বেড়াতে আসা পর্যটকেরা যেন নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারে এবং ভ্রমণ শেষে বাড়ি ফিরতে পারে সেই লক্ষে ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বিক ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়েছে। সী-বিচ সহ পর্যটন স্পটগুলোতে জোরদার রয়েছে টহল। এছাড়া পর্যটন স্পটগুলো সিসিটিভি’র আওতায় আনা হয়েছে। সক্রিয় রয়েছে ইভটিজিং প্রতিরোধের টিম। আহত বা অসুস্থ পর্যটককে দ্রুত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে রয়েছে মেডিকেল টিম। একটু পর পর টহল দিচ্ছে বীচ-বাইক ও মোটর বাইকের টিম। এছাড়া হেল্প ডেক্স রয়েছে। যেখানে পর্যটকদের সেবা দেওয়ার জন্য দায়িত্ব পালন করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। পাশাপাশি বিশুদ্ধ খাবার পানি ও প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে।

তিনি আরো জানান, শুধু ট্যুরিস্ট পুলিশ নয়। বেড়াতে আসা পর্যটকদের সেবা প্রদানের জেলা পুলিশ, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, আনসার, লাইফগার্ড সহ অন্যান্য আইনশৃংখলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে।

পর্যটকদের হয়রানি রোদে কঠোর অবস্থানে জেলা প্রশাসক। কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন জানান, পর্যটন নগরীতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের যদি কোন বিষয়ে হয়রানি করা হয় তাহলে অবস্থা খারাপ হবে। অপরাধীর বিরুদ্ধে নেওয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা। পর্যটক সেবা নিশ্চিত করতে সী-বিচ জোনে দায়িত্ব পালন করছে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট। সুতরাং কোনভাবেই যেন পর্যটক হয়রানি না হয় সেই লক্ষে সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করার আহবান জানান তিনি।

কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের মধ্য দিয়ে সকল হিংসা, বিদ্বেষ কাটিয়ে ঈদ উৎসব হয়ে উঠুক আনন্দের-এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।

-সিভয়েস/এসএ

ওমর ফারুক হিরু, কক্সবাজার

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়