Cvoice24.com


ঢিমেতালে চলছে বোয়ালিকুল সেতুর কাজ, ঝুঁকিপূর্ণ বিকল্প সেতু

প্রকাশিত: ১৭:০৮, ২৩ জুলাই ২০১৯
ঢিমেতালে চলছে বোয়ালিকুল সেতুর কাজ, ঝুঁকিপূর্ণ বিকল্প সেতু

হাটহাজারীর বোয়ালিকুল-মধ্য মাদার্শা এলাকায় মাদারি খালের ওপর গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের কাজ চলছে ঢিমেতালে। প্রকল্পে মূল ব্রিজের কাজ জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও অতিরিক্ত কাজ দেখিয়ে সময় নেয়া হয়েছে আরো ছ’মাস। বিকল্প বাঁশের সাঁকোটিও চলাচলের অনুপযোগী। ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পার হচ্ছে স্থানীয়রা। ঘটছে ছোটখাটো দূর্ঘটনা। এতে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে স্থানীয় এলাকাবাসী।

জানা গেছে, গেল বছরের আগষ্ট মাস থেকে শুরু হয় মাদারী খালের ওপর গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ কাজ। ২ কোটি ২৫ লাখ টাকায় চলতি বছরের জুনে ৩২ মিটার দীর্ঘ এ ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত কাজ দেখিয়ে সময় নেয় ছয় মাস। যার ব্যয় ধরা হয় ১৭ লাখ টাকা।

কাজের শুরুতেই নির্মাণ করা হয় বাঁশের একটি সাঁকো। কিছুদিন যাওয়ার পর থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে এটি।  মাদারিখালের উপর নির্মিত ঐ সাঁকোর উপর দিয়ে পায়ে হেঁটে পার হতে ভয় পাচ্ছেন বয়োবৃদ্ধ ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।সাঁকোর মাঝে মাঝে ফাঁক, সরে গেছে দেয়া বাঁশ। দেখা যাচ্ছে খালের পানি। দুপাশের গ্রামের প্রতিদিন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন হাজার শিক্ষার্থীসহ প্রায় দশ(১০) হাজার মানুষের চলাচলের সাঁকোটি চলাচলের অনুপোযগী হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। কাজের শুরু থেকেই এলাকাবাসীর দাবি উপেক্ষা করে বাঁশের সাঁকো নির্মাণের চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। 

ফতেয়াবাদ সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী নাদিয়া, ফতেয়াবাদ আদর্শ বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র মো. আবদুর রহিম ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র মো. সামিউল আলম আরমান। তারা তিনজনই সাঁকোর পূর্ব দিকের বোয়ালিকুল ও মধ্য মাদার্শা এলাকার।

তারা জানান, অনেক কষ্টে সাঁকোটি পার হতে হয়। ভয়ে থাকি কখন পানিতে পড়ে যাই। একেতো সাঁকোটি প্রস্থে ছোট, দ্বিতীয়ত খুবই নড়বড়ে। কোনভাবে পানিতে পড়লে স্কুল কলেজে যাওয়া অসম্ভব।

উপজেলা ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক মো. মোজাম্মেল বলেন বেশ কিছুদিন ধরে ব্রিজ নির্মাণে নিয়োজিত লোকদের এলাকাবাসী সাঁকোটি সংস্কারের অনুরোধ জানালেও তারা কর্ণপাত করেনি। গতকালও সাঁকোটি পার হতে গিয়ে স্কুলের এক ছাত্রী পায়ে গুরুতর আঘাত পেয়েছে। খালের উপর নির্মিতব্য ব্রিজটি জুনের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও এখনো শেষ করেনি। 

তিনি জানান, কাজ চলছে ধীরগতিতে। আমরা চাই পায়ে হাটার মত নয় অন্তত একটি সিএনজি অটোরিক্সা চলার মত করে সংস্কার করে দেয়া হোক। কারণ অনেক মুমূর্ষ রোগী সময়মত হাসপাতালে পৌঁছাতে পারছেনা। বিশ মিনিটের এ পথ ৫/৬ কিলোমিটার দূরে অন্য পথ দিয়ে যেতে হয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. ফরিদ খাঁন জানান, সিএনজি রিকশা পার হওয়ার সুযোগ হয় এমন ব্রিজ তৈরির দাবি শুরু থেকেই ছিলো। কিন্তু ঠিকাদার এতে কর্ণপাত করেননি।

জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ এন্ড কনসোনেন্স ইঞ্জিনিয়ার্স এন্ড বিল্ডার্স জেবি এর সুপার ভাইজার সাইদুল হক বলেন, ইতিমধ্যে সেতুর ৮৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে।

বাঁশের সাঁকো নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, কার্যাদেশে বাঁশের সাঁকো নির্মাণের কথাই বলা হয়েছে। সে অনুযায়ীই আমরা বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছি। ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোটি দুয়েক দিনের মধ্যে মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেনির্মিতব্য ব্রিজ দিয়েও যাতে মানুষ চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে।

উপজেলা প্রকৌশলী কামরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি শুনেছি। আমি সরেজমিনে যাব। বিকল্প  সাঁকোর ব্যাপারে তিনি বলেন বড় করার ইচ্ছা থাকলেও করতে পারেনি কারণ বরাদ্দ দেয়া হয়নি।

সিভয়েস/এএস

হাটহাজারী প্রতিনিধি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়