Cvoice24.com


কমিটি না থাকায় স্থবির চট্টগ্রামের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের রাজনীতি

প্রকাশিত: ১৪:৩৬, ২২ জুলাই ২০১৯
কমিটি না থাকায় স্থবির চট্টগ্রামের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের রাজনীতি

চট্টগ্রামের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগের সক্রিয় রাজনীতি থাকলেও কোন বিশ্ববিদ্যালয়েই নেই সাংগঠনিক কমিটি। দীর্ঘদিন ধরে কমিটি না থাকায় এসব ইউনিটের নেতা কর্মীদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে একধরনের হতাশা । রাজনৈতিক সক্রিয়তার স্বীকৃতি না পাওয়া ও সংগঠনের কোন পর্যায়ে মূল্যায়িত না হওয়ায় ধীরে ধীরে এসব ইউনিটে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে একধরণের স্থবিরতা নেমে আসছে। 

জানা গেছে, সরব রাজনীতি না থাকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেউ কেউ জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকছে দাবি করে এই প্রবণতা বন্ধ করতে ২০১২ সালের দিকে এসব প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের রাজনীতি চালু করার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ‘সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা’ নামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা শুরু হয় ২০১২ সালের নভেম্বরে। 

এরপর ৭ বছর পেরিয়ে গেলেও চট্টগ্রামের কোন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি ঘোষণা করতে পারেনি সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। চট্টগ্রামের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতাদের দাবি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে বাংলাদেশের অন্য যে কোন অঞ্চলের চেয়ে অনেক বেশি সক্রিয় চট্টগ্রামের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

এর মধ্যে পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউএসটিসি, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি, বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি , আইআইইউসিতে নিয়মিত পরিচালিত হয় ছাত্রলীগের কার্যক্রম। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে কোথাও কোন সাংগঠনিক কমিটি না থাকলেও ব্যতিক্রম পোর্ট সিটি ইউনিভার্সিটি ছাত্রলীগ। বছর দুয়েক আগে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের একটি কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়।

কমিটির সভাপতি কাজিম উদ্দীন সিভয়েসকে বলেন, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি চালু করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়ার পরই আমরা পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে সক্রিয় রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করি।

নিজেদের কর্মকান্ডের বিষয়ে পিসিআইইউ ছাত্রলীগের এই নেতা বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের যতগুলো সভা সেমিনারের নির্দেশনা আসে তার প্রতিটাই আমরা পালন করি। এছাড়া নিয়মিত মিছিল, মিটিং সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির ব্যাপারে সচেতন করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু দীর্ঘদিন কেন্দ্রীয় কমিটির নজরদারির বাইরে থাকায় নেতাকর্মীদের মধ্যে একধরনের হতাশা তৈরি হচ্ছে। এখানকার গতিশীল রাজনীতির ধারা অব্যাহত রাখতে সব ইউনিটে দ্রুত সময়ে কমিটি দেয়া প্রয়োজন। এই বিষয়ে আমরা কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে যোগাযোগ করছি। 

একই ধরনের মন্তব্য ইউএসটিসি ছাত্রলীগ নেতা মো. রাকিবুল হুদার। তিনি বলেন, ঢাকার বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জঙ্গীবাদে জড়িয়ে যাওয়ার খরব আমরা পত্র পত্রিকায় পড়েছি। কিন্তু চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের সক্রিয় ভূমিকার কারনে এমন কিছু ঘটেনি। দীর্ঘদিন ধরে কমিটি না দেয়ায় এই অবস্থান ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা তৈরি হচ্ছে।

এছাড়া নিজেদের ইউনিটে কমিটি না থাকায় সংগঠনের অন্য যেকোন পর্যায়েও মুল্যায়িত হচ্ছেন না বলে দাবি এসব বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের। দীর্ঘদিন রাজনীতিতে সক্রিয় থেকেও মহানগর, জেলা, সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পাচ্ছেন না এসব ইউনিটের কোন নেতা। 

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হোসেন পারভেজ সিভয়েসকে বলেন, এটা সত্য যে চট্টগ্রামের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ছাত্রলীগ অনেক বেশি সক্রিয়। এসব ইউনিটে অনেকদিন ধরেই কোন কমিটি নেই। আমরা কিছুদিন আগে দায়িত্ব নিয়েছি। আমাদের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার পর আমরা ইউনিট কমিটিগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিব। তবে এটুকু বলতে পারি সক্রিয় রাজনীতির ধারা অব্যহত রাখায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এবারের পুর্নাঙ্গ কমিটিতে চট্টগ্রাম উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতৃবৃন্দ স্থান পাবেন।  এরপর উনাদের নেতৃত্বেই চট্টগ্রামের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে কমিটি গঠনের কাজে হাত দিব আমরা।

এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক উপ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন বকুল সিভয়েসকে বলেন, আমরা এখন সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি পুর্ণাঙ্গ করা নিয়ে ভাবছি। চট্টগ্রামের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা গত সময়ে সক্রিয় ছিলেন তাদের এই কমিটিতে মূল্যায়ন করা হবে। পরে তাদের নেতৃত্বে চট্টগ্রামের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়া হবে।

সিভয়েস/এএস

 

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়