Cvoice24.com


কংগ্রেসের ৪ মুসলিম নারী সদস্যকে দেশে ফিরতে বললেন ট্রাম্প

প্রকাশিত: ০৭:০২, ১৫ জুলাই ২০১৯
কংগ্রেসের ৪ মুসলিম নারী সদস্যকে দেশে ফিরতে বললেন ট্রাম্প

কংগ্রেসের ৪ মুসলিম নারী সদস্য

যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটের কয়েকজন নারী কংগ্রেস সদস্য সম্পর্কে বিদ্বেষমূলক টুইট করার জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী আচরণের অভিযোগ উঠেছে।

অভিবাসন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্প যখন কঠোর অবস্থানে ঠিক সে মুহূর্তে বর্ণবাদ নিয়ে নতুন এক বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তিনি। গত রোববার একাধিক টুইটে প্রগতিশীল হিসেবে পরিচিত চার নারী কংগ্রেস সদস্যকে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেন ট্রাম্প।

এই চারজন কংগ্রেস সদস্য হলেন- আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-করতেস, রাশিদা তালিব, আইয়ানা প্রেসলি ও ইলহান ওমর। তাদের মধ্যে প্রথম তিনজনের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রে, একমাত্র ওমরই সোমালিয়া থেকে এসেছেন।

তিনি দাবি করেন, ওই নারীরা নিজেরা ‘এমন দেশ থেকে এসেছেন যেখানকার সরকার সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত।’ এর পরই ট্রাম্প ওই নারীদের উদ্দেশে লেখেন, ‘ফিরে যাও।’

বিবিসি বলছে, কংগ্রেসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সঙ্গে চারজন ভিন্ন বর্ণের কংগ্রেস সদস্যদের কিছুটা বচসা হওয়ার ঘটনার পরের সপ্তাহে এমন টুইট করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এক সাথে করা তিনটি টুইটের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কংগ্রেসের তিন নারীর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে 'ভয়ঙ্করভাবে' সমালোচনা করার অভিযোগ তুলেছেন।

ট্রাম্প লিখেছেন, ‘খুবই অবাক লাগে দেখতে যখন 'প্রগতিশীল' ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসের নারী সদস্যরা, যারা এমন দেশ থেকে এসেছেন যেখানে তাদের সরকার বিপর্যস্ত, বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত এবং সবচেয়ে অদক্ষ, বিশ্বের শ্রেষ্ঠ এবং সবচেয়ে ক্ষমতাশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্রে এসে এখানকার মানুষদের বলছে কীভাবে আমাদের সরকার পরিচালনা করতে হবে।’

‘তারা কেন তাদের নিজেদের অপরাধপ্রবণ দেশে ফিরে গিয়ে তাদের পরিস্থিতির উন্নয়ন করে না! তার পর ফিরে এসে আমাদের জানালেই পারে যে কীভাবে সে কাজ করলো তারা।’

এর পর ট্রাম্প স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির উল্লেখ করেন, যার ফলে কংগ্রেসের কোনো কোনো নারী সদস্যদের নিয়ে মন্তব্য করেছেন তাদের নাম উল্লেখ না করলেও ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে কাদের বিষয়ে এসব মন্তব্য করেছেন তিনি।

ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাম্প ভিন্ন বর্ণের চারজন ডেমোক্র্যাট নারী কংগ্রেস সদস্যকে ইঙ্গিত করেছিলেন যাদের তিনজনই অভিবাসী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। গত এক সপ্তাহব্যপী ন্যান্সি পেলোসির সাথে ওসারিও-কর্টেজের কিছুটা দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে।

ওসারিও-কর্টেজ স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন যে, সীমান্ত নিরাপত্তা বিল নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের সাথে দ্বন্দ্বের সময় ভিন্ন বর্ণের নারী কংগ্রেস সদস্যদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করেছেন তিনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যের অবশ্য নেতিবাচক সমালোচনাই বেশি হয়েছে।

স্পিকার পেলোসি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের টুইট সম্পর্কে লিখেছেন যে, মন্তব্যটি 'জেনোফোবিক'(বিদেশিদের সম্পর্কে অহেতুক আতঙ্ক তৈরি করার প্রবণতা)।
নিজের টুইটে পেলোসি লেখেন, ‘আমাদের বৈচিত্র্যই আমাদের শক্তি এবং একতাই আমাদের ক্ষমতা।’
ট্রাম্পের এই মন্তব্যে ডেমোক্র্যাটরা তো বটেই, রিপাবলিকান রাজনীতিবিদদেরও অনেককেই সমালোচনা করতে দেখা গেছে।

সাবেক রিপাবলিকান শীর্ষ নেতা জন ম্যাককেইনের মেয়ে মেগ্যান ম্যাককেইন, যিনি নিজেও রিপাবলিকান সমর্থক কলামিস্ট, বলেন, ‘এই মন্তব্য বর্ণবাদী।’
তিনি বলেন, ‘এই দেশে আমরা যাদের একবার স্বাগত জানিয়েছি, তাদের আবার ফিরে যেতে বলি না।’
সামাজিক মাধ্যমে ট্রাম্পের এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে অধিকাংশ মানুষ।

সিভয়েস/আই

 
 

সিভয়েস ডেস্ক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়