Cvoice24.com


কর্ণফুলী টানেলে ৯৮টি রিং স্থাপন, ১৯৪ মিটার খনন সম্পন্ন

প্রকাশিত: ১৭:১১, ২৫ জুন ২০১৯
কর্ণফুলী টানেলে ৯৮টি রিং স্থাপন, ১৯৪ মিটার খনন সম্পন্ন

ফাইল ছবি

কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে পুরোদমে চলছে টানেল নির্মাণের কাজ। দু’পাশের কাজ সমানভাবে এগিয়ে চলেছে। ইতোমধ্যে স্থাপন করা হয়েছে ৯৮টি রিং এবং খনন কাজ সম্পন্ন হয়েছে ১৯৪ মিটার। পুরো টানেল প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৪০ শতাংশ।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে সরেজমিনে কর্ণফুলী টানেল পরিদর্শনে গেলে এসব তথ্য জানা যায়।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, কর্ণফুলী নদীর নিচে ১৮ থেকে ৩১ মিটার গভীরে দুটি টিউবের মাঝ দিয়ে চলে যাওয়া ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের চার লেইনের টানেল সড়কটি সংযুক্তি ঘটাবে চট্টগ্রাম শহরের সঙ্গে এবং এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্কের সাথে গিয়ে মিলিত হবে।

এ টানেলে দুটি টিউব থাকবে। প্রতিটি টিউব চওড়ায় হবে ৩৫ ফুট এবং উচ্চতায় প্রায় ১৬ ফুট। টিউব দুটির একটি দিয়ে গাড়ি শহর থেকে প্রবেশ করবে। আরেকটি টিউব দিয়ে ওপারে যাবে। এখানে দুই লেইনে গাড়ি চলাচল করতে পারবে। প্রতিটি টিউবে বসানো হবে দুটি করে স্কেল। মিডিয়ান গ্যাট থাকবে ১১ মিটার। পাশে থাকবে একটি সার্ভিস টিউব। যেকোনো গাড়ি চলতে পারবে এই টানেল দিয়ে। যার জন্যে পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ রোড এবং ৭২৭ মিটার ওভারব্রিজও তৈরি করা হবে। এখানে মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ হাজার ৩১৫ মিটার যার মধ্যে টিউবের দৈর্ঘ্য ২ হাজার ৪৫০ মিটার।

টানেলের পূর্ব (আনোয়ারা) প্রান্তে ওপেন কাট এর দৈর্ঘ্য ২০০ মিটার, কাট এন্ড কভারের দৈর্ঘ্য ১৯৫ মিটার, এপ্রোচ রোডের দৈর্ঘ্য ৫৫০ মিটার এবং ওয়ার্কিং শ্যাফটের দৈর্ঘ্য ২৫ মিটার ধরা হয়েছে।

টানেলের পশ্চিম (পতেঙ্গা) প্রান্তে ওপেন কাট এর দৈর্ঘ্য ১৯০ মিটার, কাট এন্ড কভারের দৈর্ঘ্য ২৩০ মিটার, এপ্রোচ রোডের দৈর্ঘ্য ৪ হাজার ৭৯৮ দশমিক ০৯৫ মিটার এবং ওয়ার্কিং শ্যাফটের দৈর্ঘ্য ২৫ মিটার ধরা হয়।

আগামী ২০২২ সালের ডিসেম্বরে এটি ব্যবহার করা যাবে বলে সিভেয়েসকে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ চৌধুরী।

তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের জন্য ৩৮১ একর জমির মধ্যে বেশিরভাগ জমি অধিগ্রহণ হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বুঝিয়েও দিয়েছি। কিছু জমি অধিগ্রহণ বাকি আছে তাও দ্রুত সমাধান করা হবে। কাজ দ্রুতই এগিয়ে চলছে। আশা করছি, নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হবে।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মো. নুরুল আলম নিজামী সিভয়েসকে বলেন, সরকারের মেগা প্রকল্পের মধ্যে একটি হচ্ছে কর্ণফুলী টানেল। ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে কয়েকটি বড় প্রকল্পের মধ্যে কর্ণফুলী টানেলের বিষয়টি আনেন এবং ২০১৭ সাল থেকে এর কর্মযজ্ঞ শুরু হয়।

তিনি বলেন, এ টানেল শুধু বাংলাদেশ নয়, সার্কভূক্ত দেশগুলোর মধ্যে প্রথম। যা বাংলাদেশ মাইলফলক হয়ে থাকবে। চীনের সাংহাইয়ের ‘ওয়ান সিটি অ্যান্ড টু টাউন’ মডেলে নির্মাণাধীন কর্ণফুলী টানেলটি নির্মিত হবে। যা কর্ণফুলী নদীর দুই পাশের তথা দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটাবে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় গণনা শুরু হয়েছে। তখন থেকে ৫ বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে চায়না কমিউনিকেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি)। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার টানেল নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১৫ সালের নভেম্বরে অনুমোদন পায়। এটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রকল্পে ঋণ হিসেবে চাইনিজ এক্সিম ব্যাংক ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা অর্থায়ন করছে। বাকি টাকা বাংলাদেশ সরকার অর্থায়ন করবে। সড়ক ও সেতু বিভাগ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

-সিভয়েস/এসএ

মনিরুল ইসলাম মুন্না

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়