Cvoice24.com

বাড়ছে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ
মাটিরাঙ্গার সাপমারায় বিশুদ্ধ পানি সংকটে ৪০ পরিবার

প্রকাশিত: ১৫:৪৭, ১১ জুন ২০১৯
মাটিরাঙ্গার সাপমারায় বিশুদ্ধ পানি সংকটে ৪০ পরিবার

ছবি সিভয়েস

মাটিরাঙ্গা উপজেলার সদর ইউনিয়নের দুর্গম পশ্চাৎপদ সাপমারা গ্রামের ৪০টি দরিদ্র পরিবার পানীয় জলের তীব্র সংকটে ভুগছে। একই সাথে গ্রামের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খাবার পানির চাহিদা মেটানো দুরহ হয়ে পড়েছে। গ্রামটির পানির একমাত্র ভরসা ক্ষীণ ধারায় প্রবাহিত একটি ছড়ার পানি। বর্তমানে ছড়াটি প্রায় শুকিয়ে গেছে। তবুও যেটুকিু পানি আছে তাও হঠাৎ কালো রঙ ধারন করায় ব্যবহারে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তারপরও বাধ্য হয়ে এসব পানি পান করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে গ্রামের লোকজন।

মাটিরাঙ্গা সদর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরের সাপমারা গ্রামে মঙ্গলবার (১১ জুন) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাপমারাবাসী খাবার পানি হিসেবে ব্যবহার করছে ছড়ার পানি। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে মাটিরাঙ্গা পৌরসভা থেকে ময়লা -আবর্জনা এ ছড়ার উপর ফেলা হচ্ছে। এতে ধীরে ধীরে পানির রঙ কয়লার রঙ ধারন করেছে। আর এই পানি ব্যবহার করেছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ গ্রামের সকলে।

স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানান, এতদিন ছড়ার পানি বিশুদ্ধ খাবার পানি হিসেবে ব্যবহার করে আসলেও হঠাৎ কালো এবং ঘোলাটে পানি হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে এই পানি ব্যবহারে ভীতি সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামের লোকজন প্রায় সময় পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

সাপমারা’র বাসিন্দা ও ত্রিপুরা স্টুডেন্টস্ ফোরাম, বাংলাদেশ মাটিরাঙ্গা উপজেলা শাখার সভাপতি কান্ত মনি ত্রিপুরা বলেন, গ্রামের বেশির ভাগ পরিবার গরিব ও দিনমজুর। গভীর নলকূপ বা রিংওয়েল বসানো কারো পক্ষে সম্ভব না।

সাপমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ত্রিপুরা বলেন, গ্রামবাসী এবং বিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা বিশুদ্ধ পানি থেকে বঞ্চিত। শিক্ষকরা নিজেদের বাড়ি থেকে পানি নিয়ে আসেন। আর শিক্ষার্থীদের জন্য কূয়ার পানি বা ছড়ার পানিকে ফিল্টারে রেখে ট্যাবলেট দিয়ে ব্যবহার করা হয়। আর এসব সব পানি খেয়ে অনেক সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আর এতে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি হারও কমে যাচ্ছে। যদি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনা করেন এবং গ্রামবাসী ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য পানি ব্যবস্থা করে দেন এই সংকট দূর হবে বলে জানান তিনি।

মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যান হিরন জয় ত্রিপুরা বলেন, সাপমারা গ্রামে নলকূপ বসাতে হলে মেশিনের সাহায্যে পাথর কেটে বসাতে হবে। এটি অনেক ব্যয়বহুল যা ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে সম্ভব নয়।

খাগড়াছড়ি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, মাটিরাঙ্গা উপজেলায় বেশিরভাগ এলাকায় পাথর হওয়ার কারণে নলকূপ বসানো সম্ভব হচ্ছে না। আগেও সাপমারাতে একটি রিংওয়েল তৈরি করা হয়েছে। তবে যেসব এলাকায় পানির  সমস্যা পাওয়া যাচ্ছে সেখানে কি ব্যবস্থা করা যায় তা ভেবে দেখা হচ্ছে।

-সিভয়েস/এমএম/এসএ

প্রদীপ চৌধুরী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়