Cvoice24.com


‘আমাদের অনেকেই হতাশায় ভুগছেন’

প্রকাশিত: ১৭:০২, ২৯ মে ২০১৯
‘আমাদের অনেকেই হতাশায় ভুগছেন’

দলের সংকট মুহূর্তে নেতাদের অনেকেই হতাশায় ভুগছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (২৯ মে) বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির ইফতার মাহফিলে দেওয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি মন্তব্য করেন। রাজধানীর মুক্তি ভবনে ইফতার মাহফিল আয়োজন করা হয়।

এর আগে বুধবার দুপুরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘হঠাৎ করে শপথ নিয়ে নিয়ে সংসদে যাওয়ায় বিএনপির মধ্যে অনৈক্য বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। সারাদেশের মানুষের মধ্যে বিএনপির অবস্থান নিয়ে শত শত প্রশ্নের জন্ম হয়েছে।

বক্তব্যের চার ঘণ্টা পর কল্যাণপার্টির ইফতারে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজকে আমাদের অনেকেই হতাশায় ভুগছেন। কিন্তু আমি মনে করি, হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। হতাশা আমাদেরকে লক্ষ্যে পৌঁছে দেবে না।

তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য তো একটা, সেটা হচ্ছে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার। গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা। অগণিত নেতাকর্মীযারা গ্রেফতার হয়েছেন তাদেরকে মুক্ত করা এবং এই দুঃশাসনের অবসান ঘটানো। সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে হলে বাধা-বিপত্তি আসবে। সেই বাধা-বিপত্তিকে অতিক্রম করে শিরদাঁড়া সোজা করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে এই সময় আমরা যখন আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি, ইফতারের জন্য অপেক্ষা করছি, ঠিক সেই সময় আমাদের বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা, সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলের নেতা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দি অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘একটা মিথ্যা মামলায় তাকে অন্যায়ভাবে সাজা প্রদান করে, জামিন না দিয়ে আটক রাখা হয়েছে। শুধু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া নয়, গত এক দশকে এই আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সচেতনভাবে বিরোধীদলকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য পরিকল্পনা মতো কাজ করেছে। হাজার হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে, গ্রেফতার করেছে, গুম করেছে, খুন করেছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা একটা হিসাব করে দেখেছি যে, সারাদেশে মামলার সংখ্যা লাখের ওপরে, আসামির সংখ্যা ২৫ লাখ। ঢাকা শহর থেকে শুরু করে গ্রামের ইউনিয়ন-ওয়ার্ড লেভেল পর্যন্ত কোথাও বাকি নেই মামলা দেওয়ার। যারাই বিরোধিতা করেছে, বিরোধীদল করেছে, তাদেরকেই অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে, গায়েবি মামলা দিয়ে, আসামি করে, গ্রেফতার করে, কারাবন্দি করে হয়রানি করা হয়েছে।

নির্বাচনের নামে প্রহসন তামাশার মধ্য দিয়ে সুপরিকল্পিতভাবে দখলদারি সরকার গঠন হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘জনগণের ভোট জনগণ দিতে পারেনি। সুতরাং যারা পার্লামেন্ট গঠন করেছেন, তাদের আমরা নির্বাচিত প্রতিনিধি মনে করি না। আমাদের জোট, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, সম্মিলিত বিরোধী শক্তি কখনই বর্তমান সরকারকে বৈধ সরকার হিসেবে স্বীকার করে না।

কিন্তু বাস্তবতা এই, একটা জগদ্দল পাথর আমাদের বুকের ওপর চেপে বসে আছে। বাস্তবতা এই যে, সরকার রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে জনগণের সমস্ত মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। গণতন্ত্রের স্তম্ভগুলোকে পুরোপুরি ভেঙে দিয়েছে। আমরা জানি বিচার বিভাগ সরকারের নিয়ন্ত্রণে। প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সরকারের নিয়ন্ত্রণে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘এই অবস্থা থেকে আমরা মুক্তি পেতে চাই, পরিত্রাণ পেতে চাই। বার বার বলেছি, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা এই অবস্থার অবসান চাই। সেই জন্যই আমরা ২০ দল গঠন করেছিলাম। নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছিলাম। এই ঐক্যফ্রন্ট জোট গঠন করে আমরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে সেই নির্বাচনকে পুরোপুরি প্রহসনে পরিণত করেছিল।

বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিমের সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আব্দুল হালিম, এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, বিএনপির নির্বাহী সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতউল্লাহসহ অনেকে।

-সিভয়েস/এসএ

সিভয়েস ডেস্ক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়