Cvoice24.com


প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে জীবন দিল শারমিন

প্রকাশিত: ০৯:৩৩, ২৬ মে ২০১৯
প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে জীবন দিল শারমিন

রোকসানা (১৭) চট্টগ্রামের বিশ্বকলোনি এলাকায় একটি গার্মেন্টস কারখানায় চাকরি করতেন। দুই বোন, ভাই ও বাবাকে নিয়ে বিশ্বকলোনি এল ব্লকের একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। শনিবার (২৫ মে) দুপুর ১২ টার দিকে রোকসানা মোবাইলে একটি কল আসে। বিকাশ কল সেন্টারের পরিচয়ে ফোনটি করেছিল একটি প্রতারক চক্র। প্রতারকরা রোকসানা জানায়, সে বিকাশের গ্রাহক হিসেবে এক লাখ টাকা পুরষ্কার জিতেছে। তবে এই টাকা পেতে হলে শারমিনের বিকাশ একাউন্টে ১৪ হাজার ৫০০ টাকা ক্যাশ ইন করা লাগবে। এসব আলাপচারিতার একফাঁকে রোকসানা বিকাশ একাউন্টের পাসওয়ার্ড জেনে নেয় প্রতারকরা।

প্রতারকদের কথার ফাঁদে পা দিয়ে রোকসানা তার বাসার পাশে থাকা মায়ের দোয়া নামে একটি বিকাশ পয়েন্টে যায়। সেখান থেকে সে তার বিকাশ একাউন্টে ১৪ হাজার ৫০০ টাকা ক্যাশ ইন করে। ঐ সময় বিকাশ পয়েন্টের এজেন্টকে রোকসানা জানিয়েছিল তার নামে কিছুক্ষণ পরেই এক লাখ টাকা আসবে। সে টাকা এলেই এজেন্টের টাকা পরিশোধ করে দিবে সে। এই বুঝাপড়ার ভিত্তিতে নিজের একাউন্টে টাকা ক্যাশ ইন করে রোকসানা পুরষ্কারের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। অনেক্ষণ অপেক্ষার পরেও পুরষ্কারের টাকা আর আসে না। এরপর নিজের একাউন্ট চেক করতে গিয়ে রোকসানারতো মাথায় হাত। তার একাউন্টে কোন টাকাই নেই। এরই ফাঁকে তার বিকাশ একাউন্ট হ্যাক করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তবে রোকসানার ধারণা হয় এজেন্ট ক্যাশ ইন করেনি। এসব নিয়ে তাদের মধ্যে বাদানুবাদ শুরু হয়।

রোকসানার আর দোকানদারের বাদানুবাদের মাঝে সেখানে স্থানীয় জনতা জড়ো হয়ে যায়। বিকাশ এজেন্ট প্রমাণ করতে সক্ষম হয় সে ক্যাশ ইন করেছে। রোকসানা বুঝতে সক্ষম হয় সে প্রতারণার শিকার হয়েছে। এসবে সময় চলে যায় চার ঘন্টা। টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় রোকসানা দোকানে বসিয়ে রাখা হয়। এর মধ্যে ঘটনাস্থলে জড়ো হওয়া লোকজন রোকসানাকে উদ্দেশ্য করে নানান বিদ্রুপাত্মক কথা বলে। পরবর্তীতে রোকসানার পিতা হারুনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দূরে আছেন বলে জানান। ফিরলে টাকা পরিশোধ করে দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। এরপর রোকসানাকে ছেড়ে দেন তারা। 

ঐদিন রাত আটটায় রোকসানার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে আকবর শাহ থানা পুলিশ। পুলিশের ধারণা অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে শারমিন। 

রোকসানার মৃত্যুর কারণ হিসেবে এই ঘটনা উঠে আসে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে। এর সত্যতা নিশ্চিত করছেন আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন

এই বিষয়ে সিএমপির আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন সিভয়েসকে জানান, ' প্রতারণা শিকার হয়ে এবং স্থানীয়দের তিরস্কারমূলক কথাবার্তায় অপমাণিত হয়ে রাগে ক্ষোভে রোকসানা আত্মহত্যা করেছে বলে তার পরিবারের দাবি। আমরা বিস্তারিত জানতে কাজ করছি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মায়ের দোয়া স্টোরের মালিকের ভাইকে গতকাল থানায় ডাকা হয়েছিল। সকালে বিকাশ এজেন্ট নিজেও থানায় এসেছেন। তদন্ত শেষ হলে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারবো।

-সিভয়েস/টিআই/এএইচ

আবু রায়হান তানিন

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়