Cvoice24.com


ধ্রুব’র মৃত্যু আত্মহত্যা না খুন; মেলেনি উত্তর চার দিনেও!

প্রকাশিত: ১৪:৫৫, ১২ মে ২০১৯
ধ্রুব’র মৃত্যু আত্মহত্যা না খুন; মেলেনি উত্তর চার দিনেও!

লাশ উদ্ধারের চার দিন পেরিয়ে গেলেও জানা যায়নি ধ্রুব মজুমদারের মৃত্যুর কারণ। ঠিক কি কারণে ধ্রুবের মৃত্যু হয়েছে সেই বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারছে না ধ্রুবের পরিবার।

প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হলেও ধ্রুব মজুমদারের আত্মহত্যা করার মত কোন কারণ ছিল এমনটা মানতে রাজি নন ধ্রুব মজুমদারের সাথে একই মেসে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসা চন্দন চন্দন সম্পর্কে ধ্রুব মজুমদারের ভাগনে। ধ্রুবসহ একই মেসে থাকতেন চন্দন। কিন্তু গত কিছুদিন ধরে গ্রামে বাড়ি নির্মাণ সংক্রান্ত কাজে সন্দ্বীপ রয়েছেন তিনি।

ধ্রুব মজুমদারের মৃত্যুর বিষয়ে সিভয়েসকে তিনি বলেন, আমি সন্দ্বীপে ছিলাম। এক প্রতিবেশী টেলিফোনে ধ্রুবের মৃত্যু সংবাদ জানিয়েছিল। শুনেছি লাশ উদ্ধারের সময় বাসার দরজা খোলা ছিল। আমরা এক সাথেই ছিলাম। ধ্রুব' মধ্যে আত্মহত্যা করার মত কোন হতাশা দেখিনি কখনো। তাছাড়া একটা মানুষ বাসার দরজা খোলা রেখে আত্মহত্যা করবে বলেও মনে হয় না।

লাশ উদ্ধারের দিন বিকেল তিনটার দিকেও ধ্রুবকে বাসার নিচে রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা৷ সেই বাসার সামনে নিয়মিত বসেন চাবির কারিগর শওকত।

সিভয়েসকে তিনি বলেন, ঘটনার দিন দুপুর আনুমানিক তিনটার দিকে তার সাথে আমার দেখা হয়েছে। অন্যান্য দিনের মত আমার সাথে কথা বললো, খোঁজখবর নিল। বেশ হাসি খুশীই দেখাচ্ছিল তাকে। ধ্রুব সম্পর্কে তিনি বলেন, এলাকায় বৈদ্যুতিক মিস্ত্রী হিসেবে কাজ করতো সে। খুব ভাল ছেলে ছিল। সব সময় হাসি খুশি থাকতো।

একই রকমের মন্তব্য বিন্ডিংয়ের কেয়ার টেকার সাহাব উদ্দিনের। চার মাস ধরে এই বিল্ডিংয়ের কেয়ার টেকার হিসেবে কাজ করছেন বলে জানান তিনি।

সাহাব উদ্দিন বলেন, এই সময়ে ধ্রুব' সাথে ভাল সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তার। লাশ উদ্ধারের দিন সেহেরির টাইমে ধ্রুবকে ফোনে কারো সাথে উচ্চস্বরে কথা বলতে দেখেছেন তিনি। তবে কার সাথে কি বিষয় নিয়ে কথা বলছিল তা সম্পর্কে কিছু বলতে পারেন নি সাহাবউদ্দিন। ধ্রুব' লাশ ঘর থেকে বের করতে পুলিশকে সাহায্য করেছিলেন সাহাবউদ্দিন। লাশ উদ্ধারের সময় অস্বাভাবিক কিছু দেখেছিলেন কিনা এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পিঠে একটা দাগ ছিল তবে সেটা অনেকক্ষণ দেয়ালের সাথে লেগে থাকার কারণে হয়েছে বলে মনে হয়। এর বাইরে গলায়ও ছোট্ট একটা আছড়ের দাগ ছিল বলে জানান সাহাবউদ্দিন।

তবে কি ধ্রুব কে খুন করা হয়েছে? এমন কোন আশঙ্কা করছেন কিনা এই প্রশ্নের জবাবে চন্দন বলেন, যেহেতু এখনো পোষ্ট মর্টেম রিপোর্ট আসেনি সেহেতু এখনই এই বিষয়ে কোন কথা বলতে চাচ্ছি না। আমিতো দুই মাস ধরে সন্দ্বীপে আছি। তবে শুনেছিলাম স্থানীয় এক মুসলিম মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল ধ্রুব'র। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মেয়ের ভাইয়ের সাথে কিছু একটা ঝামেলা চলছিল ধ্রুব'র। তবে ওই মেয়ের নাম ঠিকানা কিছুই জানেন না বলেও জানিয়েছেন চন্দন।

একই অনুমানের কথা শুনা যায় ধ্রুব মজুমদারের বন্ধুদের কাছ থেকেও। মৃত্যুর কারণ জানতে ধ্রুব মজুমদারের বেশ কয়েকজন বন্ধুর সাথে কথা হয় সিভয়েসের। সিভয়েসকে তারা জানিয়েছে, স্থানীয় এক মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ককে কেন্দ্র করে বেশ কিছুদিন ধরেই ওই মেয়ের ভাইয়ের সাথে ধ্রুব মজুমদারের কিছু একটা ঝামেলা চলছিল। তবে ওই মেয়ে কিংবা মেয়ের ভাইয়ের ব্যাপারে কোন তথ্য দিতে পারেনি তারা।

সিএমপির ডবলমুরিং জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার আশিকুর রহমান সিভয়েসকে বলেন, ধ্রুব মজুমদারের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলেই ধ্রুব' মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

উল্লেখ্য, বুধবার ( মেহালিশহর রামপুর নয়াবাজার এলাকার জোবাইদা ভিলার পঞ্চম তলার একটি মেসের টয়লেট থেকে ধ্রুব মজুমজারের মৃতদেহ উদ্ধার করে হালিশহর থানা পুলিশ।

-সিভয়েস/এআরটি/এসএ

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়