Cvoice24.com

ধারাবাহিক প্রতিবেদন
লবণ শিল্প: মধ্যস্বত্বভোগীদের পোয়াবারো, মাথায় হাত মিল মালিকদের

প্রকাশিত: ১৪:০৬, ৭ মে ২০১৯
লবণ শিল্প: মধ্যস্বত্বভোগীদের পোয়াবারো, মাথায় হাত মিল মালিকদের

ছবি : মিনহাজ ঝন্টু

দেশের লবণ শিল্পের সংকটময় মুহুর্ত পার করছেন শিল্প সংশ্লিষ্ট শ্রমিক ও মিল মালিকরা। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে মাঠ পর্যায়ে লবণ উৎপাদন করেন শ্রমিকরা। সে লবণ চট্টগ্রামের মাঝির ঘাট মিলে এনে প্রক্রিয়াজাত করেন মিল মালিকরা। আর সে লবণ স্বল্প দামে মিল মালিকদের কাছ থেকে কিনে ন্যায্য মূল্যের চেয়েও বেশি দামে বাজারে বিক্রি করছে মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীরা। ফলে অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছে লবণের বাজার।

সরেজমিনে মঙ্গলবার (৭মে)  নগরীর মাঝিরঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কর্ণফূলীর তীরে সারি সারি করে ভিড়ে আছে কুতুবদিয়া ও মহেশখালী থেকে আসা লবণ বোঝাই নৌকা। এসব লবণ প্রতি কেজি ৭ থেকে ৮ টাকায় কিনে নেয় মাঝিরঘাটের মিল মালিকরা। তারপর লবণগুলো শ্রমিক দিয়ে নৌকা থেকে খালাস করে মিলে নিয়ে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। এরপর প্রক্রিয়াজাতকৃত লবণে আয়োডিন মিশ্রিত করে প্যাকেটিং ও লেবেলিং করা হয়। মিল থেকে এসব লবণ ১০ থেকে ১১ টাকা কেজি দরে কিনে নেয় মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীরা। আর এতে করে কেজি প্রতি ২০ থেকে ৩০ পয়সা লাভ থাকে তাদের। এরপর নানা নামে বেনামে এসব লবণ কেজি প্রতি ২০ টাকায় ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে। যেখানে মধ্যস্বত্বভোগীদের লাভ হয় ৯ থেকে ১০ টাকা।

লাভ কিংবা দামের কেন এতো তারতম্য! এসব জানতে কথা হয় লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি হাজী নুরুল কবিরের সাথে।

তিনি সিভয়েসকে জানান, আমরা মাঠ পর্যায়ে লবণ সংগ্রহ করি প্রতি কেজি ৮ টাকা দরে। এরপর এসব লবণ প্রক্রিয়াজতকরণ করে এতে আয়োডিন মিশ্রিত করার পর প্যাকেটিং করে খরচ পড়ে আরও ৩ টাকা ৫০ পয়সা। সব মিলিয়ে খরচ হয় ১১ টাকা ৫০ পয়সা। অথচ আজকে (মঙ্গলবার)  বাজার দর ১০ টাকা ৮০ পয়সা। অর্থাৎ কেজি প্রতি ৭০ পয়সা করে লোকসান গুণতে হবে। অথচ মধ্যস্বত্ব ভোগী ব্যবসায়ীরা এসব লবণ বিক্রি করবে কেজিপ্রতি ২০টাকা দরে। আমরা যারা মাঠ থেকে লবণ সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াজাত করে লাভ করছি মাত্র ২০ থেকে ৩০ পয়সা, সেখানে মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজিতেই লাভ করছে ৯ থেকে ১০ টাকা। এতে একদিকে শ্রমিক এবং মিল মালিকরা যেমন আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে অপরদিকে ভোক্তাদেরও লবণ কিনতে হচ্ছে বেশি দামে।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতি দাবি জানিয়ে নুরুল কবির বলেন, মধ্যস্বত্বভোগীদের এমন লাগামহীন লাভ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। নয়তো টানা লোকসানের মুখে পড়ে নিঃস্ব হয়ে যাবে মিল মালিকরা। আর এভাবে যদি চলতে থাকে এই শিল্প অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ধ্বংস হয়ে যাবে।

-সিভয়েস/এসএ

হিমাদ্রী রাহা

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়