Cvoice24.com


এবার ৮ সিনেটের আপত্তি, 'বঙ্গবন্ধু চেয়ার' পদে উপাচার্য

প্রকাশিত: ১৬:০১, ৯ মার্চ ২০১৯
এবার ৮ সিনেটের আপত্তি, 'বঙ্গবন্ধু চেয়ার' পদে উপাচার্য

ফাইল ছবি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের(চবি) 'বঙ্গবন্ধু চেয়ার' পদে উপাচার্যের যোগদান নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন চবি’র আট সিনেট সদস্য। গত ৭ মার্চ 'বঙ্গবন্ধু চেয়ার' পদে নিজেকে নিয়োগ দিয়েছেন উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। এতে কোন ধরনের নিময় নীতির তোয়াক্কা করা হয়নি বলে অভিযোগ সিনেট সদস্যদের। 

শনিবার(৯মার্চ) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির সুদৃষ্টি কামনা করে এ বিবৃতি দেন তারা।

বিবৃতিতে বলা হয়,চবি উপাচার্য ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ পদে নিয়োগের নীতিমালা এবং ১৯৭৩-এর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এ্যাক্টের কোন তোয়াক্কা না করে নিজের পদ, পদবী, এবং ক্ষমতাকে ব্যবহার করে এ চেয়ার/পদে নিজেকে নিয়োগ দিয়ে প্রকারান্তরে 'বঙ্গবন্ধু চেয়ার' এর মর্যাদা এবং সম্মান ক্ষুন্ন করেছেন এবং এ চেয়ারে বসার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন।

সিনেটরবৃন্দ দাবি করেন, “বঙ্গবন্ধু চেয়ার” পদে নিয়োগের প্রধান দু’টি শর্তই (একাধারে ২০ বছর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গবেষণা এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানের কমপক্ষে ১০ টি প্রবন্ধ/নিবন্ধ প্রকাশ করা) বর্তমান উপাচার্য পূরণ করেন না। তাছাড়া, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এ্যাক্ট ১৯৭৩-এর ধারা ২৬ (এন) অনুযায়ী যে কোন গবেষণা সংশ্লিষ্ট পদে নিয়োগের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশ প্রয়োজন। অথচ এ বিষয়ে একাডেমিক কাউন্সিলে কোন ধরনের আলোচনা হয়নি। এছাড়াও, এ পদে নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি-নির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেট সভার অনুমোদন আবশ্যক। অথচ এ বিষয়ে সিন্ডিকেট সভায় কোন অনুমোদন নেয়া হয়নি।

গত ২৩ফেব্রুয়ারী 'বঙ্গবন্ধু চেয়ার' নিয়োগের নীতিমালা সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদন করা হয় এবং সেখানেও নিয়ম-নীতি যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করার কারণে দু’জন সিন্ডিকেট সদস্য ভিন্নমত (নোট অব ডিসেন্ট) পোষণ করেন। এ দু’জনের মধ্যে একজন হচ্ছেন স্বয়ং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার। এভাবে “বঙ্গবন্ধু চেয়ার” পদে নিয়োগের কোন নীতিমালা অনুসরণ না করে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এ্যাক্ট ১৯৭৩-এর নিয়মনীতি ভঙ্গ করে, একাডেমিক কাউন্সিলের কোন সুপারিশ ছাড়া এবং সিন্ডিকেটের কোন ধরনের অনুমোদন ছাড়া কেবল নিজের ক্ষমতা ব্যবহার করে “বঙ্গবন্ধু চেয়ার” এর মতো সম্মানজনক ও মর্যাদাকর পদটি বিতর্কিতভাবে গ্রহণ করাকে সিনেটরবৃন্দ অত্যন্ত নীতিবহির্ভূত, অনাকাঙ্খিত এবং অনভিপ্রেত বলে মনে করেন।

এ ব্যাপারে সিনেট সদস্য ও লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রফেসর ড. কাজী এস এম খসরুল আলম কুদ্দুসী জানান, যেহেতু নিয়ম-নীতি অনুসরণ করে বঙ্গবন্ধু চেয়ারের দায়িত্ব দেয়া হয়নি,সেহেতু এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ পদক্ষেপ নিবেন বলে আশাপ্রকাশ করছি।

অন্যদিকে উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ৭৬জন সিনেট সদস্যের মধ্যে মাত্র আটজন সদস্য তাদের ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। বঙ্গবন্ধু চেয়ার কমিটির নীতিমালা অনুযায়ী যথাযথ প্রক্রিয়ায় আমাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু গবেষণায় জালিয়াতি,সংগঠনে গ্রুপিং সহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্তরা বর্তমান প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছে না।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী সিনেটরবৃন্দ হচ্ছেন, নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. রাহমান নাসির উদ্দিন, লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রফেসর ড. কাজী এস এম খসরুল আলম কুদ্দুসী, ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. অলক পাল,আইন বিভাগের প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক, সমাজতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর এস এস মনিরুল হাসান, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রফেসর ড.মোহাম্মদ আবুল মনছুর, লোক প্রশাসন বিভাগের প্রফেসর সিরাজ উদ দৌল্লাহ এবং উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ ওমর ফারুক রাসেল।
-সিভয়েস/এস

চবি প্রতিনিধি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়