Cvoice24.com

চট্টগ্রামে আজ, বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪

সময় ঘন্টা মিনিট সেকেন্ড


ভ্রমণপিপাসুদের নতুন ঠিকানা বাঁশখালীর অপরূপ সৈকত

প্রকাশিত: ০৬:১১, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
ভ্রমণপিপাসুদের নতুন ঠিকানা বাঁশখালীর অপরূপ সৈকত

ভ্রমনপিপাসুদের নতুন ঠিকানা বাঁশখালীর অপরূপ সৈকত।

দেশের অন্যতম একটি সম্ভাবনাময় পর্যটন অঞ্চল চট্টগ্রামের সর্বদক্ষিণে অবস্থিত উপজেলা বাঁশখালী। যার উত্তরে শঙ্খনদী, দক্ষিণে চকরিয়া-পেকুয়া, পূর্বে পাহাড় এবং পশ্চিম সীমান্ত বঙ্গোপসাগর সীমারেখায় অবস্থিত। 

পাহাড় থেকে শুরু করে প্যারাবন ও ঝাউবনে ছেয়ে থাকা সমুদ্র, ৩৯২ কি.মি. এর এই অঞ্চলে কি নেই। নীরবে নিভৃতে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের স্বাদ নিতে অনেক ভ্রমণ পিপাসুরা ছুটে আসেন এখানে। 

পাহাড়, নদী, আর সাগরের সংমিশ্রণে আকর্ষণীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সম্ভাবনাময় পর্যটন স্পট চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বাহারচড়া সমুদ্র সৈকত। শুধু পাহাড়-নদীই নয়, এখানে এলে দূর থেকে মনে হবে বিশাল বিশাল সমুদ্রের ঢেউ। লেকের পানির মতো স্বচ্ছ জলরাশি। 

এই উপকূলীয় সমুদ্র সৈকত দিন দিন পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। তাই প্রতিদিন সকালে অথবা বিকেলে অসংখ্য লোকের আনাগোনায় মুখরিত থাকে বাহারছড়ার রত্নপুর ও কদমরসুল উপকূলীয় এলাকা। সম্প্রতি শীতের মৌসুমে পর্যটকের আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মত। 

বাঁশখালী ছনুয়া, গন্ডামারা, সরল, বাহারছড়া, খানখানাবাদের উপকূলজুড়ে বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে সুদীর্ঘ ৩৭ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই সমুদ্র সৈকত। সৈকতে সারি সারি ঝাউ গাছ। ঘন ঝাউ বাগান। জোয়ার-ভাটার ঢেউয়ের শব্দ পর্যটকের মন কাড়ে। তাই বর্তমানে আনন্দভ্রমণ কিংবা পিকনিক স্পটের বিকল্প হিসেবেও পর্যটকরা বেছে নিয়েছে এ অঘোষিত প্রাকৃতিক দৃষ্টিনন্দন পর্যটন স্পটকে। 

সমুদ্র লাগোয়া অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ওপর ভিত্তি করে এই এলাকায় পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের দাবি এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন সংগঠন ও সংশ্লিষ্ট মহলের। এ জন্য বনবিভাগসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা। 

সৈকতে বেড়াতে আসা বাকলিয়া থানার এএসআই মো. সালাউদ্দীন ও ঢাকা সিএমপিতে কর্মরত মো. মনজুর, চন্দনাইশ থেকে আসা শাহিদা ইয়াছমিন, শোয়াইব, আব্দুল্লাহ, মিনহাজ, আলামগীর জানান, আমরা কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে যে কোন সময় আমাদের নিজেদের বাড়ি বাঁশখালীতে আসলেই পরিবার-পরিজন নিয়েই আমরা সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসি। পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এখানে বিদ্যমান। 

এখানকার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হচ্ছে লাল কাঁকড়া। যদি খুব সকালে সৈকত যাওয়া যায় তবেই দেখতে পাওয়া যাবে ঝাঁকে ঝাঁকে লাল কাঁকড়া। সমুদ্রের ভেজা বালির উপর লাল কাঁকড়া দেখলে লাল কার্পেটের মত লাগে। এই লাল কাঁকড়া সৈকতের সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। 

এখান থেকে সরাসরি সূর্যাস্তের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা। সমুদ্রের সঙ্গে গা ঘেঁষে রয়েছে কুতুবদিয়া চ্যানেল আর নিকটেই দ্বীপ কুতুবদিয়া। জাতীয় দিবস ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সময় বাঁশখালীর উপকূলীয় সমুদ্র সৈকত হাজারো লোকের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে। 

কক্সবাজার, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের চেয়েও এখানকার সৈকত অনেক বেশি প্রশস্ত। তবে বর্ষাকালে এই প্রশস্ততা কিছুটা কমে আসে। ১৯৯১ সাল থেকে বেশ কয়েকটি প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় এই এলাকার বেঁড়িবাধ তছনছ করে দিয়ে গেছে। ফলে পর্যটনের সৌন্দর্য সেখানে বিকশিত হচ্ছে না। তবে বর্তমান সরকার ইতিপূর্বে বেঁড়িবাধ নির্মাণের ফলে এই সৌন্দর্যময় প্রাকৃতিক উপকূলটি দৃশ্যমান হয়েছে।

পশ্চিম বাঁশখালী বঙ্গবন্ধু উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি যুবলীগ নেতা শাহেদ এমরান (শহিদ) বলেন, বাঁশখালী একটি পর্যটন সমৃদ্ধ এলাকা। এখানে ইকোপার্ক ও চা বাগান রয়েছে। রয়েছে বহু পুরাকীর্তি। এখানকার সমুদ্র সৈকতের বিশালত্ব যেকোনো বিনোদন প্রেমিককে আকৃষ্ট করে। ফলে পর্যটকরা একই সঙ্গে অনেক কিছু দেখার ইচ্ছা থাকলে অনায়াসে বাঁশখালীতে আসতে পারেন। 

বাঁশখালী উপকূলীয় বনবিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তা অলিউর রহমান জানান, এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় উপকূলকে পর্যটন স্পটে রূপান্তরের জন্য পুরো উপকূলজুড়ে ঝাউবাগান ও প্যারাবাগান সৃষ্টির জন্য বর্তমান সরকার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। যাতে যে কেউ এখানে এসে আনন্দ উপভোগ করতে পারেন। 

এখানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হলে সরকার যেমন লাভবান হবে, তেমনি বিনোদনপ্রেমী পর্যটকেরা আনন্দভ্রমণের জন্য খুঁজে পাবে নতুন ঠিকানা।

-সিভয়েস/এসএইচ
 

মুহাম্মদ মিজান বিন তাহের, বাঁশ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়