Cvoice24.com


ইয়াবা কারবারিদের আত্মসমর্পণ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

প্রকাশিত: ০৯:০০, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
ইয়াবা কারবারিদের আত্মসমর্পণ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

ফাইল ছবি।

স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে ১০২ ইয়াবা কারবারির আত্মসমর্পণকে সাধুবাদ জানানোর পাশাপাশি কক্সবাজার জেলার সচেতন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তাঁরা বলছেন, স্বচ্ছতার অভাব হলে আত্মসমর্পণকারী এই ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সামনে রেখে রাঘব রোয়ালরা পার পেয়ে যাবে। 

এছাড়া আত্মসমর্পণের দিন মাদক ব্যবসায়ীদের জমা দেওয়া ৩০ টি দেশিয় অস্ত্রের ধরণ একই হওয়ার পাশাপাশি এনাম মেম্বার নামে এক মাদক ব্যবসায়ীর বক্তব্যে তাকে ফাঁসানো হয়েছে বলে নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টায় বিভ্রত সচেতন মহল। তার মধ্যে আত্মসমর্পণের মাত্র ৫ ঘন্টার ব্যবধানে শহরের লিংক রোড থেকে গ্যাস সিলিন্ডার ভর্তি ৪০ হাজার ইয়াবাসহ সরওয়ার আলম নামে এক ব্যক্তি র‌্যাবের হাতে আটক হওয়ায় হতাশ সচেতন মহল।

এই আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়াকে কাউকে বাণিজ্য হিসেবে না নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার (সাবেক) শাহজাহান চৌধুরী জানান, দেরিতে হলেও এই পদক্ষেপ সমগ্র জাতীর জন্য কল্যাণকর। কিন্তু শুধু টেকনাফ নয় কক্সবাজার সদরসহ সারা দেশে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। সুতরাং শুধু টেকনাফের ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বন্ধ করলে হবেনা। কারণ এটি ইয়াবা ব্যবসায়ীদের একটি অংশ মাত্র। তাই যারা আত্মসর্মপণ করেছে তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে বাকীদের আইনের আওতায় আনা হলে ইয়াবা ব্যবসা ধ্বংস হবে।

তিনি আরো বলেন, ইয়াবা আসে মিয়ানমার থেকে। তাই বিজিবি ও গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়তে হবে। তিনি বলেন, ইয়াবা যখন মিয়ানমার থেকে আসে তথন নগদ টাকা দিতে হয়না। পাচারকারীদেরও টাকা দিয়ে ইয়াবা কিনতে হয়না। শুধুমাত্র ব্যবসায়ীরাই টাকা দিয়ে ইয়াবা কিনে। তাই এই অবৈধ ব্যবসার প্রতি সাধারণ লোকজন ঝুঁকছে। সুতরাং সচেতনতা বৃদ্ধিসহ আইন প্রয়োগের মাধ্যমে ওই প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে। 

কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা জানান, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। তবে এই ১০২ জন মাদক ব্যবসায়ীর বাইরে অনেক ইয়াবা কারবারি সক্রিয় রয়েছে। এই নেটওয়ার্ক যদি ধ্বংস না হয় কখনও সুফল আসবেনা। তিনি আরো বলেন, ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সম্পদ খতিয়ে দেখতে হবে। তা যদি অবৈধ হয় তা বাজেয়াপ্ত করতে হবে। 

সংসদ সদস্য জাফর আলম বলেন, কেউ যদি মাদকের কারণে কক্সবাজারকে ছোট করে দেখে তখন মনে কষ্ট লাগে। তাই এই যাত্রা হচ্ছে কক্সবাজারকে কলঙ্ক মুছনের যাত্রা। এই মাদকের সাথে যদি কোন ক্ষমতাধর ব্যক্তি জড়িত থাকে তাকে আইনের আওতায় আনা হোক। 

উল্লেখ, গত শনিবার টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে ১০২ মাদক ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণের সময় সাড়ে ৩ লাখ ইয়াবা ও ৩০ টি অস্ত্র জমা দেন। তাদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। পরে তাদের জেল হাজতে পাটানো হয়।

গত বছরের মে মাস থেকে এই পর্যন্ত ৪২ জন মাদক কারবারি বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩৭ জনই হলেন টেকনাফের। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া গত বছরের তালিকা অনুযায়ী কক্সবাজার-টেকনাফের ১১৫১ জন মাদক কারবারির মধ্যে ৭৩ জন গডফাদার রয়েছে। এই তালিকায় সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি’র পরিবারের সদস্য রয়েছে ২৬ জন।

-সিভয়েস/এসএইচ
 

ওমর ফারুক হিরু, কক্সবাজার

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়