Cvoice24.com

বিশ্ব মৃগী রোগ দিবস আজ
বাড়ছে মৃগী রোগীর সংখ্যা

প্রকাশিত: ০৭:০৮, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
বাড়ছে মৃগী রোগীর সংখ্যা

ফাইল ছবি।

নাজিম উদ্দীন (২৯)। পেশায় একজন রিক্সা চালক। ৯ ফেব্রুয়ারি চকবাজার এলাকায় রিক্সা চালাতে গিয়ে হঠাৎ খিঁচুনি দিয়ে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যান। তার এমন অস্বাভাবিক আচরণে পথচারীরা এগিয়ে এসে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃগী রোগী বলে সনাক্ত করেন। 

এরকম মৃগী রোগীরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোলজি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন থাকে বলে সিভয়েসকে জানিয়েছেন নিউরোলজি ওয়ার্ডের ডা. সীমান্ত ওয়াদ্দাদার।

মৃগী রোগের প্রকৃত কারণ জানা না গেলেও মস্তিষ্কে আঘাত, স্ট্রোক, মস্তিষ্কে টিউমার বা সংক্রমণ, জন্মগত ত্রুটি প্রভৃতিকে সম্ভাব্য কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা।

চমেক হাসপাতাল নিউরোলজি ওয়ার্ড সূত্রে জানা যায়, সারাদেশে মৃগী রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। দেশে শতকরা ১ জন মৃগী রোগে আক্রান্ত। তবে নতুনভাবে হাজারে ৫ থেকে ৩০ জন এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩০ শয্যার নিউরো মেডিসিন ওয়ার্ডে গড়ে ১ শত ২০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। এর মধ্যে মৃগী রোগী থাকেন হাতেগোনা কয়েকজন। অধিকাংশ মৃগী রোগীদের প্রতি সোমবার বহিঃ বিভাগেও চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়।  

নিউরোলজি চিকিৎসক ডা. সীমান্ত ওয়াদ্দাদার সিভয়েসকে বলেন, মৃগী রোগীর ইতিহাস, মৃগী রোগ উঠার ভিডিও দেখে রোগীদের কোন রকম পরীক্ষা ছাড়া চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়।

চমেক হাসপাতাল নিউরোজি ওয়ার্ডের সহযোগী অধ্যাপক ডা. প্রদীপ কুমার কায়স্থগীর বলেন, মৃগী রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির কাপুনি বন্ধ করতে বল প্রয়োগ, মুখে শক্ত কিছু ঢোকানো ও জোর করে স্থানান্তরের চেষ্টা করলে রোগীর বড় ধরনের ক্ষতি হয়।

অজ্ঞতা আর কুসংস্কারের কারণে জীবনহানি কিংবা বেঁচে থাকলেও সামাজিক বৈষম্য এবং মানসিক নির্যাতনেরও শিকার হন এই রোগীরা।

নিউরোলজি বিশেষজ্ঞ ডা. প্রদীপ কুমার কায়স্থগীর বলেন, মৃগী রোগীদের নিকট থেকে বিপদজনক রয়েছে এমন জিনিস যেমন আগুন, পানি, ধারালো বস্তু, আসবাবপত্র সরিয়ে রাখতে হবে।  খিঁচুনী আক্রান্ত অবস্থায় রোগীকে সরানোর চেষ্টা না করাই ভালো। রোগী দাঁড়ানো বা চেয়ারে বসা অবস্থায় খিঁচুনীতে আক্রান্ত হলে তাকে আলতো করে ধরে মেঝেতে শুইয়ে দিতে হবে। এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে রোগী পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত না পায়।

অবশ্যই যেন তার মাথার অংশটি নিচের দিকে থাকবে। এর ফলে তার যে লালা আছে সেটি যেন বের হয়ে আসে। 

এদিকে নিউরোলজি ওয়ার্ডের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. হাসানুজ্জামান বলেন, মৃগী রোগী নিয়মিত ২ থেকে ৫ বছর ওষুধ খেয়ে ৬০% মুক্ত হয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করে থাকে। মৃগী রোগীর চিকিৎসা স্বল্প খরচে করা যায়। 

তিনি আরো বলেন, মৃগী রোগে আক্রান্ত রোগী অসুস্থ হওয়ার সাথে সাথে নিজে কি করে তা বলতে, বুঝতে পারেনা। জ্ঞান ফেরার পর রোগীর কিছু সময়ের জন্য মানসিক বিভ্রম দেখা দেয় বিধায় এ সময়টুকু রোগীর পাশেই থাকা উচিত। তাকে আশ্বস্ত করা উচিত। পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় না আসা পর্যন্ত রোগীকে ছাড়া যাবে না। 

সিভয়েস/এসএইচ

মিনহাজুল ইসলাম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়