Cvoice24.com


সমাবেশে দেখা নেই বিএনপির প্রথম সারি নেতাদের

প্রকাশিত: ১৪:৩৭, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
সমাবেশে দেখা নেই বিএনপির প্রথম সারি নেতাদের

ছবি: আজীম অনন

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় গত একবছর কারাগারে রয়েছেন বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া । দীর্ঘ এক বছরে তাদের দলের অভিভাবকের জন্য কিছুই করতে পারেনি বিএনপি। এর মধ্যে আরো একটি মামলায় সাজার রায় এসে গেছে । এছাড়া আরও মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানোয় আটকে গেছে মুক্তি। তিনি অংশ নিতে পারেননি একাদশ সংসদ নির্বাচনেও।

খালেদা জিয়ার কারাগারে থাকার এক বছরের মাথায় কেন্দ্র থেকে সারাদেশের প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষণা দেয় দলটি। কেন্দ্র ঘোষিত সমাবেশ পালন করে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি।

আজ শনিবার ( ৯ ফেব্রুয়ারি) নসিমন ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে দেখা যায়নি চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির প্রথম সারির কোন নেতাকে। মূলত ‘সমাবেশ’ করার ঘোষণা দিলেও অনুষ্ঠানটি  একটি ‘ঘরোয়া মিটিং’ এর মতো দেখা যায়। নেতাকর্মীদের উপস্থিতি এত কম দেখে হতাশা প্রকাশ করতেও দেখা যায় কিছু নেতাকে।

বিএনপি সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বিভিন্ন মামলায় দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন। সম্প্রতি তিনি কারগার থেকে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য ভারতে অবস্থান করছেন।

এদিকে চট্টগ্রাম ৮ আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আবু সুফিয়ান। দলীয় কার্যালয়ে জরুরি সভায় অংশ নিতে তিনি রয়েছেন ঢাকায়। মহানগর বিএনপির সাধরণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর নগরীর বিভিন্ন থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা মামলা এবং পুরোনো রাজনৈতিক মামলায় কারাগারে রয়েছেন। দলের শীর্ষস্থানীয় এই তিন নেতাকে ঘিরে মূলত চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভা সমাবেশ প্রাণ চাঞ্চল্যতা দেখা যেত। এই তিন নেতা না থাকায় তাদের সমর্থকরা কোনো মিটিং-সমাবেশে অংশগ্রহণ করছে বলে জানা যায়।

সমাবেশস্থলে গিয়ে দেখা যায়, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির মধ্যম সারির কিছু নেতা উপস্থিত থাকলেও যুবদলের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক, ছাত্রদলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের কেউই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। তবে নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান এবং সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন। তিনি বক্তব্য শেষ করেই তার সাথে আসা ৪-৫ জন কর্মীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন।

সমাবেশে অংশ নেওয়া বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আবু মুসা সিভয়েসকে বলেন, আন্দোলন-সংগ্রাম, সভা, সমাবেশ সফল করে দলের ত্যাগী ও জনপ্রিয় নেতারা। কিন্তু বর্তমান সরকার আমাদের প্রতিটি থানা এবং ওয়ার্ডের প্রথম সারির নেতাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে বন্দি করে রেখেছে। আমরা প্রত্যেকে প্রতিদিন আদালতে একাধিক মামলার হাজিরা এবং জামিন শুনানিতে অংশ নিচ্ছি। এরমধ্যেও সরকারি দলের ক্যাডারদের হামলা আর হুমকির সম্মুখিন হতে হচ্ছে। প্রশাসনের নানামূখী চাপকে সহ্য করতে হচ্ছে। সমাবেশস্থান থেকে বিনা কারণে গ্রেফতার করা হচ্ছে- এসব নানা কারণে আমাদের সাধারণ কর্মী সমর্থকরা সমাবেশে আসতে ভয় পাচেছ।

তবে অচিরেই এই অবস্থার পরিবর্তন হয়ে বিএনপির সকল কর্মী সমর্থকদের চাঙ্গা করার মাধ্যমে রাজপথে আন্দোলনে ফিরে আসবেন বলে জানান এই নেতা।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক ইদ্রিস আলী সিভয়েসকে বলেন, আমাদের সভাপতি কারাগার থেকে বের হয়ে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে। দলীয় সভায় যোগ দিতে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু সুফিয়ান ঢাকায় এবং সাধারণ সম্পাদক মিথ্যা মামলায় কারাগারে রয়েছেন। শত প্রতিকূলতার মধ্যে আমাদের সমাবেশ করতে হয়। আমরা মহানগর বিনএপি, মহিলাদল, স্বেচ্ছাসেবকদল, ছাত্রদলসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে আজকের প্রতিবাদ সমাবেশ সফলভাবে সমাপ্ত করেছি।

উল্লেখ্য, বেগম খালেদা জিয়ার কারাগারে যাওয়ার এক বছর পূর্তিতে বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত সমাবেশের আয়োজন করে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি এম এ আজিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক সাহেদ বক্স, সহ-দপ্তর সম্পাদক ইদ্রিস আলী, আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. সরওয়ারুল আলম, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক হামিদ হোসেন,  কুটির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আব্দুন নবী প্রিন্স, মহিলা দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক জেলী চৌধুরী, মহানগর বিএনপির বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আবু মুসা, স্বেচ্চাসেবক দল চট্টগ্রাম মাহানগরী শাখার সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু প্রমুখ।

-সিভয়েস/এসএ

মুহাম্মদ নাজমুল হাসান

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়