Cvoice24.com


আইন না থাকায় জরুরি সাইরেনের যথেচ্ছ ব্যবহার

প্রকাশিত: ১৫:৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০১৯
আইন না থাকায় জরুরি সাইরেনের যথেচ্ছ ব্যবহার

সাধারণ গাড়িতে জরুরি সাইরেনের যথেচ্ছ ব্যবহার হচ্ছে। আইন না থাকায় এ ব্যাপারে নীরব প্রশাসন-পুলিশ। অথচ এ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়িতে এই সাইরেন ব্যবহার করা উচিত। জরুরি কাজে নিয়োজিত থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের গাড়িগুলো সড়কে অগ্রাধিকার পাওয়ার জন্য ব্যতিক্রমী এই সাইরেন ব্যবহার করে।

এদিকে জরুরি সাইরেনের যথেচ্ছ ব্যবহারের কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হয় সাধারণ পথচারী ও যাত্রীদের। এর কারণে শব্দ দূষণও হচ্ছে।

রাস্তা জুড়ে হাজারো গাড়ি দাপিয়ে বেড়ালেও ব্যতিক্রমী এ সাইরেন শুনলেই ফাঁকা হয়ে যায় রাস্তা। প্রচন্ড যানজটের মধ্যেও এ সাইরেন বাজানো গাড়িগুলোকে ছেড়ে দিতে রাস্তায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশরাও। ফলে খুব সহজেই যানজট থেকে শুরু করে রাস্তায় বিনা বাধায় গাড়িগুলো পৌঁছে যায় তাদের কাঙ্খিত গন্তব্যে। পুলিশ, এ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, ভিআইপি ও নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়িগুলোও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এ সাইরেন ব্যবহার করতে না পাড়লেও কিছু ব্যক্তিগত গাড়ি এ সাইরেন ব্যবহার করে ফায়দা লুটছে।

সাধারণ মানুষ যানজটে পড়ে যখন ক্লান্ত অবস্থায় তখন কিছু অসাধু ব্যক্তি গাড়িতে এ সাইরেন বাজিয়ে রাস্তা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আজ শুক্রবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেল ৫টায় নগরীর লালখান বাজার মোড়ে এ সাইরেন বাজিয়ে ছুটে আসতে দেখা যায় একটি প্রাইভেট কারকে। জাপানের কার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান টয়োটা ব্র্যান্ডের ব্রাউন কালারের প্রিমিও মডেলের এ গাড়িটি কোন সরকারি প্রতিষ্ঠানের না হয়েও রাস্তায় এ সাইরেন বাজিয়ে ছুটছিল অপ্রতিরোধ্য গতিতে। শুধু কার নয় লালখান বাজার মোড়ে আরো ১৫-২০ মিনিট অবস্থান করে দেখা যায় অবৈধ এ সাইরেন বাজাচ্ছে কিছু মোটর সাইকেল ব্যবহারকারীরাও। যার বিকট শব্দে ভোগান্তিতে পড়ছে পথচারীরা আর বোকা হচ্ছে সাধারণ চালকরা।

লালখান বাজার মোড়ে এ বিষয় নিয়ে ফরিদ নামে এক পথচারীর সাথে কথা হয় প্রতিবেদকের। তিনি জানান, সাধারণত জরুরী এই সাইরেন শুনলেই মনে হয় কোন জরুরি কাজে ছুটছে গাড়িগুলো। পুলিশের গাড়ি সাইরেন বাজালে প্রাথমিক ভাবে মনে করি কোন ভিআইপিকে প্রোটকল দিচ্ছে তারা। ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে শুনলে মনে হয় কোথাও না কোথাও আগুন লেগেছে। আর এ্যাম্বুলেন্স এ সাইরেন শুনলে মনে হয় গাড়িতে কোনো রোগী বা লাশ রয়েছে। তবে এখন এ সাইরেন শুনলে দেখতেও ইচ্ছে করে না কি গাড়ি যাচ্ছে। আগে অবশ্য কৌতুহল নিয়ে দেখতে চাইতাম। কারণ এখন সাইরেন শুনলেও রাস্তায় দেখা যায় না সংশ্লিষ্ট গাড়িগুলোকে। ব্যক্তিগত গাড়িতে এর ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় আমরা সাধারণ মানুষও এখন বিরিক্ত।

আল-আমিন নামে এক কভারভ্যান চালক জানান, জরুরি সাইরেন শুনলেই আগে গাড়ি থামিয়ে জায়গা করে দিতাম। তবে এখন আগে লুকিং গ্লাসে দেখি কোন গাড়ি সাইরেন বাজাচ্ছে তারপর সাইড দেই। কেননা, আগে সাইরেন শোনা মাত্র সাইড দিয়ে অনেকবার দেখলাম কিছু প্রাইভেট কার আর মোটর সাইকেল আমাকে ওভারটেক করছে। এমন কয়েকবার হওয়ার পর এখন আর সাইরেন শুনলে সাইড দিতে ইচ্ছে হয় না।

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরেটি (বিআরটিএ) চট্টগ্রামের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মনজুরুল হক এ বিষয়ে সিভয়েসকে জানান, সংশ্লিষ্ট সংস্থা ছাড়া যারা গাড়িতে জরুরি কাজে ব্যবহার হওয়া সাইরেন ব্যবহার করছে তা অবৈধ। তবে সাইরেন নিয়ে বাংলাদেশ মোটরযান আইনে কোন নির্দিষ্ট আইন না থাকায় আমরা এসব গাড়ি চালকদের বিরুদ্ধে কোন শাশ্তি মূলক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছি না। তবে আদেশ অমান্য করার দায়ে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যায়। আমরা আমাদের পরর্বতী অভিযানে এ বিষয়ের উপর কাজ করবো।

এ বিষয়ে ট্রাফিকের উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদ হাজারী সিভয়েসকে জানান, আসলে এমন কিছু গাড়ি চালক আছে যারা এ ধরনের অবৈধ হাইর্ডোলিক হর্ন ব্যবহার করে। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের নিয়মিত অভিযান চলছে। আসলে হর্ন নিয়ে নির্দিষ্ট করে আইন না থাকায় আমরা এসকল চালকদের বিরুদ্ধে কোন শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি না। তবে শাস্তি স্বরূপ আমরা হর্নগুলো গাড়ি থেকে খুলে নিয়।

-সিভয়েস/এস

আল আমিন সিকদার

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়