Cvoice24.com


সকল পর্যায়ে নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিচ্ছে নগর আওয়ামী লীগ

প্রকাশিত: ০৯:১৭, ১২ জানুয়ারি ২০১৯
সকল পর্যায়ে নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিচ্ছে নগর আওয়ামী লীগ

প্রতীকি ছবি

দীর্ঘ দিন ধরে নগরের আওতাধীন ওয়ার্ড ও থানা আওয়ামী লীগ কমিটিগুলো বহাল রয়ে গেছে। সময় পেরিয়ে গেছে মহানগর আওয়ামী লীগ কার্য নির্বাহী কমিটিরও। গঠনতান্ত্রিক বিধি নিয়ে নির্ধারিত সময়ে কমিটি পুনর্গঠিত না হওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে নানামুখী সাংগঠনিক সমস্যা।

কোন কোন ওয়ার্ড বা থানা কমিটিতে পদে থাকা অনেক নেতা মৃত্যুবরণ করেছেন। আবার কোন কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা রয়েছেন প্রবাসে। ক্ষেত্র বিশেষে কোথাও কোথাও কমিটির পদে থাকা অনেকেই পদ নিয়ে রয়েছেন নিস্ক্রিয়। আবার কোন কোন কমিটি দীর্ঘ সময় পার করেছে আহবায়ক কমিটি নিয়ে। এমন নানা সাংগঠনিক প্রতিকূলতার মধ্যেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বৈতরণী পার হয়েছে সংগঠনটি।   

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর এই সংগঠনের দায়িত্ব এসে পড়ে সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের উপর। সাংগঠনিক অস্বাভাবিকতার এই সময়ে এসে পড়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তবুও নগর আওয়ামী লীগের লাখো আদর্শিক নেতাকর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রম, প্রচেষ্টার কারণে মহানগরের ছয়টি আসনে বিজয় নিশ্চিত করে নগর আওয়ামী লীগ। 

দলের নানামুখী সাংগঠনিক অস্বাভাবিকতা  দূরীকরণ, শক্তি বৃদ্ধি, নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি এবং জবাবদিহিমূলক রাজনীতি চর্চা প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামছে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ। প্রস্তুতি নিতে যাচ্ছে সম্মেলন অনুষ্ঠানের। 

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ৪১ টি ওয়ার্ড ও ১৬টি থানা আওয়ামী লীগ কমিটিকে সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক উপায়ে পুনর্গঠিত করা হবে। মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সম্মেলন আয়োজনের মধ্য দিয়ে নেতৃবৃন্দের ব্যালটে গঠন করা হবে থানা কমিটি। গঠিত থানা কমিটি নেতৃবৃন্দের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হবে ওয়ার্ড সম্মেলন। ঐ সম্মেলনে থানা নেতৃবৃন্দ পুনর্গঠন করবে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কমিটি। 

একইভাবে ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ প্রতি ওয়ার্ডে তিনটি করে ইউনিট কমিটি গঠন করে দেবে। মহানগর আওয়ামী লীগ এই কমিটি পুনর্গঠন প্রক্রিয়া মনিটরিং করবে। তৃণমূলের কমিটি গঠন সম্পন্ন হলে মহানগর কমিটি গঠনের ব্যাপারে কেন্দ্রে আবেদন জানানো হবে। কেন্দ্রের সম্মতি ও নির্দেশনায় পুনর্গঠিত হবে নগর আওয়ামী লীগ কার্যকরী পরিষদ। 

এ ব্যাপারে নগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন সিভয়েসকে বলেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সরকার টানা তৃতীয়বারের মত দেশ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছে। মহান মুক্তিযুূৃদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী এ দলের প্রতি বাঙালির আশা-প্রত্যাশা অনেক। একরাশ প্রত্যাশা পূরণের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে হলে সরকারের পাশাপাশি দলীয় দৃঢ়তা গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

তিনি বলেন, নগর আওয়ামী লীগ আওতাধীন ওয়ার্ড ও থানা কমিটিগুলোর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে অনেকদিন। এতে করে  নানা সাংগঠনিক প্রতিকূলতা সৃষ্টিসহ দলের নিস্ক্রিয়তা প্রকট হয়ে উঠছে। নির্বাচনের বিষয়টি মাথায় রেখে এতদিন নগর আওয়ামী লীগ কোন কমিটি পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়নি। এখন সময় দলের ভিত মজবুত করার। দীর্ঘদিনের অচলায়তন ভেঙে নবীন-প্রবীনের সমন্বয়ে দলকে শক্তিশালী করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্রী পরিষদের দিকে তাকালে অনুধাবন করা যায় তার দূরদৃষ্টি। অনেকেই যা ভাবেননি তিনি তাই করেছেন। দেশের উন্নয়ন- ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তিনি মন্ত্রী পরিষদ গঠন করেছেন। পরিস্থিতি তিনি তৈরি করেছেন। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতির শিক্ষা নিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক ও গঠনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কমিটিগুলো রিশাফল করবে। পর্যায়ক্রমে সম্মেলন আয়োজন করা হবে।

সম্মেলনে ব্যালটের মাধ্যমে কমিটি পুনর্গঠন করা হবে। আমরা মনস্তাত্ত্বিকভাবে কমিটি গঠনের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকরী পরিষদের সভায় এ বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে পাস করা হবে। ওয়ার্ড, থানা কমিটি পুনর্গঠনের পর এই কমিটিকে দায়িত্ব দেয়া হবে তৃণমূল পর্যায়ের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলো একীভূত করার। এক্ষেত্রে অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের মহানগর পর্যায়ের কমিটি পুনর্গঠনে নেতৃত্ব দেবে নগর আওয়ামী লীগ। সব কমিটি গঠনের পর মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করার জন্য কেন্দ্রে আবেদন জানানো হবে। 

জানা যায়, মহানগর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয় নগর আওয়ামী লীগ সাবেক সভাপতি এম এ মান্নান ও সাধারণ সম্পাদক এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী প্যানেল গঠনের সময়। এরপর মহিউদ্দিন চৌধুরী-ইনামুল হক দানু প্যানেল, এ বিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী-আ জ ম নাছির উদ্দীন প্যানেল গঠনের সময়ও কোন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। এবারই নগর, ওয়ার্ড ও থানা কমিটি পুনর্গঠনে গনতান্ত্রিকভাবে সম্মেলন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যাচ্ছে মহানগর আওয়ামী লীগ। 

এ ব্যাপারে নগর আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ বলেন, সংগঠন শক্তিশালী এবং নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি আজ সময়ের দাবি। দীর্ঘদিন ধরে ওয়ার্ড, থানা এবং মহানগর কমিটি কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। দলের সাংগঠনিক সক্রিয়তা বৃদ্ধির জন্য একেবারে তৃণমূল পর্যায় থেকে কমিটি পুনর্গঠনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

-সিভয়েস/এসএইচ

উজ্জ্বল দত্ত

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়