Cvoice24.com


সংরক্ষিত আসনের এমপি হওয়ার দৌড়ে চট্টগ্রামের ১০ নেত্রী

প্রকাশিত: ১৩:০০, ১১ জানুয়ারি ২০১৯
সংরক্ষিত আসনের এমপি হওয়ার দৌড়ে চট্টগ্রামের ১০ নেত্রী

ছবি : সিভয়েস

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সমাপ্ত হওয়ার পর শপথ নিয়েছেন নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা। এরই মধ্যে মন্ত্রি পরিষদের শপথ গ্রহণ শেষে এবার আলোচনায় আছে সংরক্ষিত আসন। চট্টগ্রাম থেকে সংরক্ষিত আসনের এমপি হওয়ার দৌড়ে আলোচিত হচ্ছে অনেকের নাম।

আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, এবার সংরক্ষিত মহিলা আসনে নতুন মুখকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। যারা দলের ও সরকারের দুর্দিনে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, বিভিন্ন নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ও সরকারের উন্নয়ন প্রচারে অবদান রেখেছেন। একইসঙ্গে দলের ও দলের সহযোগী সংগঠনে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা তাদেরই মূল্যায়ন করবেন ।

যারা আলোচনায় আছেন তাদের মধ্যে সদ্য বিদায়ী সাংসদ কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ওয়াসিকা আয়শা খান, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক সাংসদ রফিকুল আনোয়ারের কন্যা খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, সুচিন্তা বাংলাদেশ চট্টগ্রাম বিভাগের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট জিনাত সোহানা চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য চেমন আরা তৈয়ব, উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বাসন্তী প্রভা পালিত, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর রেখা আলম চৌধুরী, রেহেনা বেগম রানু, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সারোয়ার কাবেরী, মহানগর যুব মহিলা লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম ওমেন চেম্বারের পরিচালক মোস্তারী মোর্শেদ স্মৃতি, চট্টগ্রাম ওমেন চেম্বারের পরিচালক নাজমা আক্তার মিতা।

ওয়াসিকা আয়শা খান আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাষ্ট্রদূত আতাউর রহমান খান কায়সারের কন্যা। দশম সংসদে তিনি সংরক্ষিত আসনের এমপি ছিলেন। এসময় তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে চট্টগ্রাম জুড়ে। তার কর্মকাণ্ডে প্রধানমন্ত্রীর নজর কাড়ার কারণে মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান অর্জন করেন তিনি। দায়িত্ব পান কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির।

এছাড়াও তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চাইলেও শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন পান সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। তিনিও আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য আখতারুজ্জামান বাবুর পুত্র। বর্তমানে জাবেদ নতুন মন্ত্রী পরিষদের ভূমি মন্ত্রী।

এদিকে, জাবেদের সাথে বিরোধ মিটিয়ে নির্বাচনে কাজ করেছেন ওয়াসিকা। সে হিসাবে এবারও তাঁকে সংরক্ষিত আসনে এমপি করা হবে এমনটা আলোচনায় আছে।

খাদিজাতুল আনোয়ার সনি তার বাবার মৃত্যুর পর দলের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সরাসরি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চেয়েও তিনি পাননি। এই আসনে তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীকে মনোনয়ন দিয়েছে দল। এখন সংরক্ষিত আসনে নারী সাংসদ হিসেবে তিনি মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। সনি উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হিসাবে ফটিকছড়িতে নিজস্ব বলয় তৈরি করে বাবার রাজনীতিকে চাঙ্গা রেখেছেন।

অ্যাডভোকেট জিনাত সোহানা চৌধুরী দলের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সরকারের উন্নয়ন সফলতা সর্বস্তরের মানুষের কাছে তুলে ধরে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। বিশেষ করে বিভিন্ন মাদ্রাসায় উপস্থিত থেকে জাতীয় সঙ্গীত ও দেশের প্রতি কর্তব্য সম্পর্কে মাদ্রাসা ছাত্রদের আকৃষ্ট করে দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ করছেন। এরই মাঝে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের হাত থেকে সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেছেন। এবার সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন পাবেন বলে মনে করছেন জিনাত সোহানা। তিনি সুচিন্তা বাংলাদেশ চট্টগ্রাম বিভাগের সমন্বয়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

চেমন আরা তৈয়ব নবম সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। দশম সংসদে তিনি মনোনয়ন না পেলেও তাকে দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। একাদশ সংসদ নির্বাচনে সরাসরি নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন প্রত্যশী থাকলেও মনোনয়ন পান শামসুল হক চৌধুরী। এবার সংরক্ষিত কোটায় আবারো দলের মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী তিনি।

এডভোকেট বাসন্তী প্রভা পালিত চট্টগ্রাম উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদিকা। একাদশ জাতীয় নির্বাচনে তিনি সরাসরি নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন চাইলেও মনোনয়ন পান মহাজোটের নেতা জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলেও এবার তিনি দলীয় মূল্যায়ন হিসাবে সংরক্ষিত কোটায় এমপি হতে চান অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ ট্রাইব্যুনালের চট্টগ্রামের সাবেক এই কৌঁসুলি। যদি তিনি মনোনয়ন পেয়ে এমপি হন তাহলে তিনি হবেন চট্টগ্রাম থেকে প্রথম সংগ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারী সংসদ সদস্য।

রেখা আলম চৌধুরী চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর। দুইবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তিনি। ওয়ান ইলেভেনের সময় দায়িত্ব পালন করেছেন ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসাবে। রাজনীতিতে তিনি সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী নগর মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

এছাড়াও তিনি মেয়র নাছিরের চাচী শাশুড়ি। শিল্পপতি হিসাবেও পরিচিতি রয়েছে  চট্টগ্রাম ওমেন চেম্বারের এই পরিচালকের। তবে রয়েছে নানা বিতর্কও। জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচন করে হেরে যান তিনি। সম্প্রতি রাস্তার উপর অবৈধ গাড়ি পার্কিং করা নিয়ে পুলিশ সদস্যদের সাথে তর্কে জড়িয়েও সমালোচিত হন এই নারী নেত্রী। তবে তিনি এবার আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত কোটায় এমপি হতে চান। নারায়ণগঞ্জের মেয়ে রেখা আলম চৌধুরী রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটার মধ্যম ভূমিরখীল গ্রামের শাহ আলম চৌধুরীকে বিয়ে করে চট্টগ্রাম নগরীতে বসবাস করছেন।

অ্যাডভোকেট রেহেনা বেগম রানু চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর। নারী অধিকার ও বাল্য বিবাহ নিয়ে কাজ করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি। ফাইট ফর উইমেন

ইমরান এমি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়