Cvoice24.com


দশভুজা সাহানা বাজপেয়ী

প্রকাশিত: ১৬:৩৮, ৯ জানুয়ারি ২০১৯
দশভুজা সাহানা বাজপেয়ী

সাহানা বাজপেয়ী দুই বাংলার প্রায় সব শ্রেণীর দর্শক-শ্রোতার প্রিয় সঙ্গীত শিল্পী। সাহানা শিক্ষকও বটে। ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের বাংলার শিক্ষকতা করেন। সম্প্রতি ‘বেঙ্গল প্রাইড এ্যওয়ার্ড’ পেয়েছেন। এক সময় বাংলাদেশে তার জীবন যাপন ছিল। এখনও নাই এমনটাও বলা যাবে না। রবীন্দ্রসংগীতকে অন্যরূপে শ্রোতাদের উপহার দিচ্ছেন। লোকগানেও তার আধিপত্য লক্ষণীয়। সাহানা বাজপেয়ী কথা বলেছেন সিভয়েস প্রতিবেদক তানভিরুল মিরাজ রিপনের সাথে। ইমেইলে দীর্ঘ আলাপে তিনি বলেছেন গান, পেশা, শিক্ষাকতা, শৈশব ও ব্যস্ততা নিয়ে। সাক্ষাৎকারটি সিভয়েস পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

সিভয়েস : কেমন আছেন?

সাহানা বাজপেয়ী : ধন্যবাদ। আমি ভালো আছি।

সিভয়েস: সম্প্রতি “বেঙ্গল প্রাইড অ্যাওয়ার্ড” পেয়েছেন, এ বিষয়ে কিছু বলুন?

সাহানা বাজপেয়ী: আমি খুব একটা অ্যাওয়ার্ড পেতে অভ্যস্ত নই। অন্তত গানের ক্ষেত্রে। আমি সবসময় পড়াশোনার জন্য অ্যাওয়ার্ড পেতাম। এই অ্যাওয়ার্ড আমাকে খুবই আনন্দিত করেছে। আমি তো লন্ডনে থাকতে এসেছি। এরপরেও এখানকার পার্লামেন্টে গিয়ে আর্টস এন্ড কালচারের জন্য অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি। এটাতে আমি অবাক ও আনন্দিত। আমি এই ব্যাপারটাকে আজও হজম করতে পারিনি। কারণ অনেকেই আছেন এখানে বাংলা সংস্কৃতি, গান, শিল্প নিয়ে কাজ করছে।

সিভয়েস: কাকীমাকে (সাহানার মা) বলতে শুনেছি, ছোটবেলায় নাচে অাপনার যেমন আগ্রহ ছিল, গানে তেমনটা ছিলো না।

সাহানা বাজপেয়ী : মা সব সময় বলেন বাবা জন্মের আগে থেকে আমাকে গান শুনাতো। সুতরাং গানের সাথে সম্পর্ক শুরু থেকে। আমার বাবা ছোট বেলায় আমাকে প্রথম উপহার দিয়েছেন একটা পোর্টেবল রেডিও। তখন তো আমি সারাক্ষণ গান শুনতে থাকতাম। আর আমার বাবা কাছে গানের ভাল কালেকশন ছিল। তিনি দারুণ বেহালা বাজাতেন। প্রফেশনালি না গায়লেও বাবার গান গাওয়া অপূর্ব। আমার বাবা আমাকে গান শিখাতেন। ওস্তাদ তালিম দিচ্ছেন এমনটাও না। লোডশেডিংয়ে বাড়ির বারান্দায় বসে গান শিখাতেন। আমার খুব মনে পড়ে ছোট বেলার স্মৃতি। সাত বছর বয়স থেকে আমার শান্তি নিকেতনে পড়া শুরু। তখন থেকেই গান শেখা শুরু। শান্তিনিকেতনে পড়ার সময় গান, নাচ, ছবি আঁকা ম্যান্ডাটরি ছিল। আমি আমার জীবন থেকে বিবেচনা করে বলতে পারি শিশুদের জন্য রবীন্দ্রনাথের শিক্ষা ব্যবস্থাই দরকার। আমি যদি শান্তি নিকেতনে গাছের তলায় বসে ক্লাস না করতাম, তাহলে আমার মনের পরিধি বড় হতো না। আমি খুব নাচতে ভালবাসতাম তার সঙ্গে গানও গাইতাম।

সিভয়েস: আপনি তো দশভুজা! আপনি একজন শিক্ষক, সংগীত গবেষক ও শিল্পী, গীতিকার, সুরকার, বাদক এর পাশাপাশি একজন মা। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে গান করতে যাচ্ছেন। কিভাবে এতো কিছু সামলান ? শুনলাম পিএইচডি করছেন।

সাহানা বাজপেয়ী : আমি পিএইচডি করছি ‘এথনো মিউজিকোলজি’ নিয়ে। এটি মিউজিক এন্ড কালচারের একটা ব্রাঞ্চ। এ সব সামলানোতে আমার মনে হয় সবকিছু ইচ্ছার ওপর। ইচ্ছা থাকলেই হয়। আমি তো জানি তুইও (প্রতিবেদক) অনেক কিছু সামলিয়ে চলছিস। হাহাহা! তুইও বুঝিস যে ভালবাসার জায়গা থেকে কাজ করতে তো সমস্যা হয় না। হ্যাঁ মেয়ে ফেলে কেউ কখনো যেতে চাইবে না। কিন্তু আমি তাকে রেখে গেলেও জানি আমাকে মিস করলেও সে ভাল থাকবে। তার বাবা আছে, আশেপাশে কমিউনিটিও এই ক্ষেত্রে অনেক সাহায্য করে। যার কারণে পারছি। যখন দেখব পারছিনা তখন আর করব না।

সিভয়েস: এখনতো কলকাতা ও বাংলাদেশে প্লে-ব্যাকে সময় দিচ্ছেন?

সাহানা বাজপেয়ী : বাংলাদেশে অতটা বেশি না রুবাইয়াত হোসেনের ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’ ছবিতে অর্নবের এ্যারেঞ্জমেন্টে গেয়ে ছিলাম। কলকাতায় পরমব্রতের একটা ছবি ‘হাওয়া বদল’ এ রবীন্দ্রনাথের একটা গান গেয়েছিলাম। অনুপমের সাথে মৈনাক ভৌমিকের ‘ফ্যামিলি এ্যালবাম’ ছবিতে কাজ করেছি। বাচ্চাদের জন্য তৈরী করা খুবই স্পেশাল একটা ছবি ‘রেইনবো জেলী'তে একটা মৌলিক গান গেয়েছি। রিচেন্ট ‘এক যে ছিল রাজা’ ও ‘কন্ঠ’ ছবিতে গান গেয়েছি। অতটা বেশি করছি তা না। অল্প-স্বল্প গাওয়া হয়। 

সিভয়েস: বিভিন্ন সময় বিশেষ করে কলকাতার খবরের কাগজ গুলো আপনার জাতীয়তা নিয়ে কনফিউশন সৃষ্টি করছে। এটি নিয়ে বিব্রত হন কিনা?

সাহানা বাজপেয়ী : কলকাতায়তো আমি থাকি না। আর বাংলাদেশ থেকে আমার প্লাটফর্মের শুরু। সেটাও তো ভুলে যাওয়া যাবে না। হ্যাঁ আমি বাংলাদেশকে ভালবাসি বলেই আমি ওখানে ঘর বেঁধে ছিলাম। তারা আমাকে ভালবাসে। আর কিছু কিছু কনফিউশন সৃষ্টি হওয়া উচিত। হাহাহা! আমি ভারতের, বাংলার,বাংলাদেশের, আমি বাঙালি। 

সিভয়েস : সিভয়েসকে সময় দেয়ায় অনেক ধন্যবাদ।

সাহানা বাজপেয়ী:  সিভয়েস এবং তোমাকেও ধন্যবাদ। সত্যি আই এম ভেরী হাম্বল।

-সিভয়েস/এস/আরএইচ

তানভিরুল মিরাজ রিপন

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়