Cvoice24.com


সেলাই প্রশিক্ষণ নিয়ে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন ৩৫ নারীর

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ৯ জানুয়ারি ২০১৯
সেলাই প্রশিক্ষণ নিয়ে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন ৩৫ নারীর

পূর্ব গুজরা ইউনিয়ন পরিষদে সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণার্থীদের একাংশ। ছবি : প্রতিনিধি

রাউজান উপজেলার পূর্ব গুজরা ইউনিয়ন পরিষদের পরিচালনায় নারীদের সেলাই প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণ নিয়ে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছে ৩৫ জন নারী। 

দরিদ্র পরিবারের সন্তান মিম সুলতানা। সে মধ্যম আধারমানিক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী। পড়ালেখার পাশাপাশি পরিবারের অভাব ঘোচাতে সেলাই কাজের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। সপ্তাহে ৩ দিন সে সেলাই কাজ শিখছে। সেলাই কাজ করে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছে মিম। 

মিম সুলতানার মতো সেলাই প্রশিক্ষণ নিয়ে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন রোকসানাও। সে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অনার্স ১ম বর্ষে পড়ার পাশাপাশি প্রশিক্ষণ নিচ্ছে সেলাইয়ের। রোকসানা সিভয়েসকে বলেন, পড়ালেখার পাশাপাশি কিছু একটা করার ইচ্ছে ছিল। তাই সেলাই কাজ করা জন্য প্রশিক্ষণ নিচ্ছি। বর্তমান সময়ে পড়ালেখার খরচ বেশি। অভাবের মধ্যে মা-বাবার কাছে টাকা চাইতে খারাপ লাগে। সেলাই কাজ শিখে নিজের পরিধেয় জামা কাপড় সেলাইয়ের পাশাপাশি উপার্জন করে পড়ালেখার খরচ যোগাতে পারব। 

মিম সুলতানা ও রোকসানার মতো পড়ালেখা না করলেও সেলাই কাজ শিখছেন আয়েশা আকতার। সে পূর্ব গুজরা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আব্বাস আলী টেন্ডল বাড়ির জনৈকের কন্যা। অভাবের সংসারে ছাড়তে হয়েছে পড়ালেখা। তাই বাড়িতেই অলস সময় কাটে তার। নিজের ও পরিবারের জন্য কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে তাকিয়ে থাকতে হয় দিনমজুর বাবার দিকে। তাই স্ব-উদ্যোগী হয়ে সেলাই কাজ শিখছি। ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে পূর্ব গুজরা ইউনিয়ন সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন রাউজানের সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। 

প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি পরিচালনা করছে ইউনিয়ন পরিষদ। সপ্তাহের রবি, সোম ও মঙ্গলবার ৪ শিফটে ১ ঘন্টা করে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। ৪টি ব্যাচের ৩৫ জন নারী প্রশিক্ষণার্থীর জন্য রাখা হয়েছে মাসিক বেতনভুক্ত প্রশিক্ষক। ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে ১০ থেকে ১২টি মেশিন রাখা হয়েছে। প্রশিক্ষক তুষার আচার্য্য বলেন, এখান থেকে সেলাই কাজ শিখে অনেকেই সেলাই কাজ করছেন। সেলাই কাজ করে তারা স্বাবলম্বী হচ্ছেন। সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিচালনায় চেয়ারম্যান সহযোগিতা করছেন বলেও জানান তিনি। 

সহকারী প্রশিক্ষক শাহনাজ আকতার বলেন, আমি এখানে সেলাই কাজ শিখে এখন সহকারী প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। আমার খুব আনন্দ লাগছে এজন্য যে আমি নিজে শিখে অন্যদের শিখাতে পারছি। শুধু মিম সুলতানা ও রোকসানা কিংবা আয়েশা আকতার নয়, ৩৫ নারীই জানালেন তারা আত্মনির্ভরশীল হয়ে স্বাবলম্বী হতে চান। তাই ভাগ্য বদলের হাতিয়ার হিসেবে তারা সেলাই প্রশিক্ষণ বেছে নিয়েছেন। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর অদম্য ইচ্ছে তাদের। 

এ প্রসঙ্গে পূর্ব গুজরা ইউনিয়নের চেয়াম্যান মুক্তিযোদ্ধা আব্বাস উদ্দিন আহমেদ সিভয়েসকে বলেন, আমার এলাকার নারীরা যাতে আত্মনির্ভরশীল হতে পারে সেজন্য আমরা এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র করেছি। পূর্ব গুজরা ইউনিয়ন পরিষদের পরিচালনায় সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে কাজ শিখে অভাব ঘোচানোর পাশাপাশি বেকারত্ব হ্রাস পাবে।

তিনি আরো বলেন, নারীরা এখন আর ঘরে বসে নেই। সামাজিক নানা প্রতিবন্ধকতা দূর করে প্রান্তিক নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন। যারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তারা নিজেরা আত্মনির্ভরশীল হবেন।  

-সিভয়েস/এসএইচ
 

মো. হাবিবুর রহমান, রাউজান

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়