Cvoice24.com


‘জ্বর-কাশি হলেই এন্টিবায়েটিক খাবেন না’

প্রকাশিত: ১৪:২৭, ৮ জানুয়ারি ২০১৯
‘জ্বর-কাশি হলেই এন্টিবায়েটিক খাবেন না’

এন্টিবায়েটিকের যথাযথ ব্যবহার না হওয়ায় মানব দেহে এর কার্যকারীতা হারাচ্ছে। এর ফলে ঝুঁকির মুখে আছে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। জ্বর-কাশি হলেই এন্টিবায়েটিক খাওয়া, সঠিক নিয়মে কোর্স সম্পন্ন না করা ও যথাযথ ব্যবহার না করায় মানব দেহে এন্টিবায়েটিক রেজিস্টেন্স হয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘আন্টিবায়েটিক রেজিস্টেন্স বৈশ্বিক হুমকি’ শীর্ষক একটি সাইন্টেফিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বক্তারা এসব মন্তব্য করেন।

চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ইসমাইল খান সেমিনারে চেয়ারপার্সন ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। বিআইটিআইডির পরিচালক প্রফেসর এম এ হাসান চৌধুরীর সঞ্চালনায় চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্টার ডা. হাসিনা নাসরিন ও ডা. মামুনুর রশিদ আলোচক হিসাবে ছিলেন।

চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ইসমাইল খান মূল প্রবন্ধে বলেন, এন্টিবায়েটিকের ভুল ও অপব্যবহারের কারণে এটি মানব দেহে অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে। গত শতকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার ছিল এন্টিবায়েটিক। অথচ এর ভুল ও অপব্যবহারের কারণে অনেকের শরীরে কার্যকারীতা হারিয়েছে। এখন এটি বৈশ্বিক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। এন্টিবায়েটিক রেজিস্টেন্স মানব দেহে জিন গত পরিবর্তন ঘটায়। যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যেও বিস্তার করতে পারে। ব্যাকটেরিয়া ডিএনএ পরিবর্তন ঘটাতে পারে।

তিনি বলেন, এন্টিমাইক্রোবিয়ালস রেজিস্টেন্স এর কারণে রোগীর শরীরে এন্টিবায়েটিক ড্রাগ কাজ করে না এবং একই জীবানু অন্যের শরীরেও বিস্তার করতে পারে। সেই শরীরেও জীবানু ড্রাগ রেজিস্টেন্স হতে পারে। খুব বেশি নতুন এন্টিবায়েটিক আবিষ্কার হচ্ছে না। যার কারণে এটি মানব স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে।

 এন্টিবায়েটিক নিয়ে আরো গবেষণার উপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, কিছু ব্যাকটেরিয়া একাধিক এন্টিবায়েটিক রেজিস্টেন্স অর্জন করেছে। এগুলো নিয়ে আরো গবেষণার প্রয়োজন আছে। 

এন্টিবায়েটিক ব্যবহারে চিকিৎসকদের ধর্য্য ধারণ করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন,মানব দেহের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক ব্যাকটেরিয়া মোকাবেলা করতে পারে। কিন্তু চিকিৎসকরা ধর্য্য ধারণ করে না। এটি  এন্টিবায়েটিক রেজিস্টেন্সের মাত্রা বাড়াচ্ছে। এছাড়া মাত্রাতিরিক্ত ডোজ, নিজে থেকে ঔষুধ সেবন ও চিকিৎসার নিয়ম কানুন মেনে না চলার কারণে  এন্টিবায়েটিক কার্যকরিতা হারাচ্ছে। চিকিৎসকদের উচিত রোগীদের সঠিক কাউন্সিলিং করা। রোগীদের নিয়মিত ঔষুধ সেবনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।

এন্টিবায়েটিক রেজিস্টেন্সের কারণে চিকিৎসার ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, রোগীদের শরীরে কমন ঔষুধ কাজ না করলে তাদেরকে অনেক দামী ঔষুধ দিতে হয়। যা ফলে চিকিৎসার ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। প্রত্যেকে ইন্সটিটিউশনে এন্টিবায়েটিক ড্রাগ গাইড লাইন থাকা উচিত। এন্টিবায়েটিকে তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করতে হবে কি এক্সেস, ওয়াচ গ্রুপ ও রিজার্ভ গ্রুপ। এগুলো ধাপে ধাপে ব্যবহার করতে হবে।

ডা. হাসিনা নাসরিন বলেন, অনেক চিকিৎসক রোগী হারানোর ভয়ে এন্টিবায়েটিকের অযথা ব্যবহার করেন। কিন্তু রোগীদের সঠিক কাউন্সিলিং করা গেলে তারা চিকিৎসার ধাপ বুঝতে পারে। এতে রোগী চলে যাবে না বরং বাড়বে।

তিনি বলেন, ডায়রিয়া হলেই অনেকে এন্টিবায়েটিক খায়। কিন্তু শুধু মাত্র স্যালাইন খেলে ডায়রিয়া ভালো হয়। রোগীদের বিষয় গুলো বুঝাতে হবে।পোল্ট্রি ও ভেটেনারী চিকিৎসায় এন্টিবায়েটিক ব্যবহারে সর্তক হবার পরামর্শ দেন তিনি।

-সিভয়েস/এস

সিভয়েস ডেস্ক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়