উখিয়া-টেকনাফে নির্বাচনকে ঘিরে বাড়ছে উত্তাপ আর শঙ্কা
ছবি : প্রতীকী
জাতীয় নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে উখিয়া-টেকনাফে প্রচার-প্রচারণার পাশাপাশি ততই বাড়ছে উত্তাপ আর শঙ্কা। বিগত কয়েকদিন ধরে ভোটের মাঠের এ উত্তাপ আরও বেড়ে চলেছে। একাধিক ঘটনার কারণে এ উত্তাপের সৃষ্টি। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীর দুই প্রার্থীই পরস্পরের বিরুদ্ধে পেশিশক্তি ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন।
আজ মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, ভোটকে ঘিরে দু’পক্ষেই বিরাজ করছে নানা গুঞ্জন আর শঙ্কা।
এদিকে বড় দু’দলের মধ্যে দিনরাত ভোট ভিক্ষা করে বেড়াচ্ছেন আওয়ামী লীগ তথা মহাজোটের চূড়ান্ত প্রার্থী থেকে বাদ পড়া সাংসদ আবদুর রহমান বদি’র সহধর্মীনি শাহিন আক্তার। আর বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে ৪ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী।
এছাড়াও জাতীয় পার্টি (এরশাদ) প্রার্থী এম এ মনজুর লাঙ্গল প্রতীক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মোহাম্মদ শোয়াইব হাতপাখা মার্কা নিয়ে মাঠে রয়েছে। তবে শক্ত অবস্থানে রয়েছে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ।
(কক্সবাজার-৪) উখিয়া-টেকনাফ নির্বাচনী এলাকা ঘুরে বিভিন্ন ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উখিয়া-টেকনাফে ভোটাররা দীর্ঘদিন পর আগামী ৩০ ডিসেম্বর তাদের দামি ভোটটি যোগ্য প্রার্থীকে প্রদানের জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
চাকবৈঠা এলাকার ভোটার নুরুল আলম সিভয়েসকে জানান, নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রচার-প্রচারণায় মাঠ ততই সরগরম হচ্ছে। প্রতিদিন কোন না কোন প্রার্থী দুয়ারে দুয়ারে আসছেন ভোট চাইতে। সেই সাথে দিচ্ছেন বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি। আমরাও চাই যোগ্য প্রার্থী বিজয়ী হোক। তবে মনের মধ্যে অজানা শঙ্কা কাজ করছে। একই কথা শোনালেন আরেক ভোটার ফকির আহমদ। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে হামলা-পাল্টার ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসন যদি শক্ত হাতে এগুলো দমন না করে তাহলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান সরওয়ার জাহান চৌধুরীর নিকট নির্বাচনী পরিবেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, নির্বাচন কমিশন সরকারের নির্দেশে কাজ করছে। এখনো নির্বাচনী সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি তারা। প্রশাসন দায়িত্ব পালনে পুরোপুরি ব্যর্থ। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন মামলা দিয়ে প্রতিনিয়ত গণহারে গ্রেফতার করা হচ্ছে। রাতে কেউ ঘরে থাকতে পারছেনা। সাধারণ ভোটারেরা রয়েছে শঙ্কা, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়।
তবুও জয়ের ব্যাপারে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, অত্যাচার, নির্যাতন, জেল-জুলুমের বিরুদ্ধে ব্যালট বিপ্লবের মাধ্যমে আগামী ৩০ ডিসেম্বর বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় আসবে।
উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আলী আহমদ সিভয়েসকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে সাধারণ মানুষ এবারও নৌকার পক্ষে গণরায় দেবে এতে কোন সন্দেহ নেই। দেশের অন্যান্য স্থানের চেয়ে এখানকার রাজনৈতিক পরিবেশ অনেক শান্ত এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি।
তবে প্রশাসনের কেউ এ ব্যাপারে মুখ খুলতে না চাইলেও একটি সূত্র জানিয়েছে, আগামী ৩০ ডিসেম্বর সকল দলের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে একটি সুষ্ঠু অবাধ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
ভাগ্য নির্ধারণী আসন হিসেবে উখিয়া-টেকনাফের (কক্সবাজার-৪) এ আসনটি দীর্ঘদিন বিএনপির দখলে থাকলেও শেষ সময়ে এসে আওয়ামী লীগ ভাগ বসায়। তাই আসনটি পুনরুদ্ধারে মরিয়া বিএনপি। আর অন্যদিকে ঘরের আসনটি ধরে রাখতে আপ্রাণ চেষ্টায় রয়েছে আ’লীগ।
-সিভয়েস/এসএইচ
আবদুল্লাহ আল আজিজ, উখিয়া