নগরীতে লক্কর-ঝক্কর গাড়ির দাপট, নীরব প্রশাসন
চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন সড়কে অবাধে চলছে এসব ফিটনেসবিহীন টেম্পু। ছবি : সিভয়েস
নিরাপদ সড়কের দাবিতে নজিরবিহীন শিক্ষার্থী আন্দোলনের পরও সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রামেও সড়ক নিরাপত্তা এখনো অধরা রয়ে গেছে।
নগরীর বিভিন্ন সড়কে এখনো চলছে রুটপারমিট ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি। ভুয়া লাইসেন্সধারী চালকরা অবাধে গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামছে। অনেক তোড়জোড়ের পরও দেশের প্রতিটি সড়ক এখনো অরক্ষিত। প্রতিদিনের মৃত্যুফাঁদ সড়কে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার কোনো উদ্যোগই দৃশ্যমান নয়। চলছে উল্টোপথের গাড়ি। ফলে, নিত্যদিনের সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যু ঠেকানো যাচ্ছে না।
সরেজমিনে বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, কোতোয়ালী, ষোলশহর ২নং গেইট থেকে চকবাজার, কোতোয়ালী থেকে নতুন ব্রিজ, দেওয়ানহাট থেকে অলংকার এবং নয়া বাজার বিশ্বরোডে চলছে লক্কর-ঝক্কর টেম্পু। যেগুলোর কোন ফিটনেস নেই।
এ প্রসঙ্গে আব্দুর রহিম নামে একযাত্রী বলেন, টেম্পু গুলোর কোন ফিটনেস নেই। চালকের লাইসেন্স আছে কিনা আমরা কখনো যাচাই করি না। সময় হাতে নিয়ে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যায়, এত কিছু জিজ্ঞেস করতে তো আর পারি না। চালকের লাইসেন্স আছে কি নেই তা যাচাই করার জন্য তো পুলিশ আর ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন। তারা কেন নীরব বসে আছেন?
শাহিনা আক্তার বলেন, ড্রাইভারদের যদি লাইসেন্স না থাকে তাহলে আমরা থাকি বিপদে। তারা ড্রাইভারদেরকে কোন পরীক্ষা না করে টাকার আশায় লাইসেন্স দিয়ে দেয়। এসব চালকদের প্রতিহত করা দরকার।
আরাকান সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মো. মুছা বলেন, চট্টগ্রামের বিআরটিএ অফিসে গেলে তাদের থেকে লাইসেন্স নিতে তৃতীয় ব্যক্তির সহযোগীতা নিতে হয়। সে কারণে যারা অদক্ষ চালক তারা লাইসেন্স পাচ্ছে আর যারা সত্যিকার অর্থে গাড়ি চালাতে পারে তারা লাইসেন্স পাচ্ছে না।
বিআরটিএ চট্টগ্রাম বিভাগের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াউল হক মীর সিভয়েসকে বলেন, আমরা নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে নিয়মিত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করি। আমরা রুট পারমিট, লাইসেন্স, রেজিস্ট্রেশন, হেলমেট, যানবাহন বীমা, গাড়িতে অনুমোদিত সিট সংখ্যার চেয়ে অতিরিক্ত সিট এবং হাইড্রোলিক হর্নের জন্য জরিমানা প্রদান করছি। সেই সাথে চালকদের সচেতন করে দিই, যাতে পরবর্তীতে তারা সতর্ক হয়। যেসব গাড়ি জরাজীর্ণ সেসব গাড়িকে জব্দ করে ডাম্পিং এ পাঠিয়ে দিচ্ছি। আবার যাদের কাগজপত্র ঠিকঠাক আছে তাদেরকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছি।
চট্টগ্রাম বিআরটিএ সার্কেলের সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি:) বলেন, লাইসেন্স নিয়ে বর্তমানে কোন ভোগান্তি পেতে হয় না। অনলাইন বা ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা জমা দিয়ে সহজেই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে পরীক্ষার্থীরা। তার কিছুদিনের মধ্যেই পেয়ে যাচ্ছে লাইসেনন্স। তবে গাড়ি বা চালককে লাইসেন্স দেয়ার পূর্বে প্রচুর যাচাই-বাছাই করা হয়।
ম্যাজিস্ট্রেট এস.এম মনজুরুল হক বলেন, নগরীতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার সময় দেখি লক্কর-ঝক্কর গাড়ি শহরের বিভিন্নস্থানে চলাচল করছে। গত ২ মাস আগেও বিশটা টেম্পু ডাম্পিং এ দিয়েছিলাম। তবে আমরা বর্তমানে তেমন ডাম্পিং এ দিচ্ছিনা কারণ বিকল্প ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত সব গাড়ি ডাম্পিং এ দিতে পারছিনা। কারণ সব গাড়ি ডাম্পিং এ দিলে পরিবহন সংকট পড়তে পারে, তাতে আবার সাধারণরা ভোগান্তিতে পড়বে।
-সিভয়েস/এসএইচ
মনিরুল ইসলাম মুন্না