Cvoice24.com

পতাকা বৈঠক শেষ
অবশেষে মিয়ানমার থেকে ফিরল ১৭ বাংলাদেশি

প্রকাশিত: ১০:১৬, ৫ ডিসেম্বর ২০১৮
অবশেষে মিয়ানমার থেকে ফিরল ১৭ বাংলাদেশি

অবশেষে মিয়ানমারে বিজিবি ও বিজিপির মধ্যে পতাকা বৈঠক শেষে ফেরত দেয়া হয়েছে বিভিন্ন মেয়াদের সাজা ভোগকারী ১৭ বাংলাদেশিকে।

আজ (৫ ডিসেম্বর) বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আছাদুদ-জামান চৌধুরীর নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল ও মিয়ানমার মংডুর অভিবাসন বিভাগের কর্মকর্তা হটেন লিনেন’র নেতৃত্বে ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দলের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক শেষে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ১৭ বাংলাদেশি নাগরিককে নিয়ে সদর বিওপি চৌকির সংলগ্ন বাংলাদেশ-মিয়ানমার টেকনাফ নতুন ট্রানজিট ঘাটে পৌঁছায়।

বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন, টেকনাফ-২ বিজিবির মেজর মামুনুর রশিদ, স্টাফ অফিসার মোহাম্মদ জোবাইর আহমদ, জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার নুরুল আবছার, জেলা বিশেষ শাখার (ডিএসবি)’র প্রতিনিধি পরিদর্শক এসএম মিজানুর রহমান, পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি টেকনাফ মডেল থানার এসআই বোরহান উদ্দিন ভূঁইয়া, বিজিবির সুবেদার মোহাম্মদ ইব্রাহীম হোসেন, স্টাফ অফিসার নায়েক সহকারী সরোয়ার আলম, মেডিকেল অফিসার শরীফুল ইসলাম, দোভাসী কবির হোসেন প্রমুখ ।

পরে দুপুর ১টায় ওই জেটিতে ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আছাদুদ-জামান চৌধুরী সংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

তিনি বলেন, এসব ব্যক্তিরা সাগরপথে মালয়েশিয়ায় যাত্রাকালে মিয়ানমারের আটক হয়েছিল। বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগ করে এদের ফেরত পাঠানো হয়। পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর বৈঠকের মাধ্যমে এদের ফেরত আনা হয়। ফেরত আনা ব্যক্তিদের থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ তাদের স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেবে।

এ ব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস বলেন, ফেরত আনা ১৭ বাংলাদেশিকে আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

ফেরত আসা বাংলাদেশিরা হলেন, চটগ্রাম জেলার বশিরা এলাকার লেদু মিয়ার ছেলে বদিউল আলম, নেটা ফকির পাড়া এলাকার ওয়াসি উর রহমানের ছেলে মো. হেলাল, একই জেলার বাঁশখালী সরল বাজার এলাকার আয়ুব আলী ছেলে জামাল উদ্দিন, খাগড়াছড়ির বড়দোলা কোনজুরি পাড়া এলাকার অং জো মারমার ছেলে সে থু অং মারমা, একই এলাকার মং প্রু মারমার ছেলে ইউ সা খ মারমা, টেকনাফ উপজেলা উত্তর শিলখালী এলাকার আব্দুস শুক্কুরের ছেলে রহিম উল্লাহ, একই এলাকার নুরুল কবিরের ছেলে মুফিজু রহমান, আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে আজিজুল ইনলাম, কক্সবাজার জেলা দক্ষিণ কলাতলি এলাকার মো সামির ছেলে মো. শফিক, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের গোদারবিল এলাকা মো. সব্বির আহমদের ছেলে মো শাকের, কক্সবাজার ঘোনাপাড়া এলাকার আজগর আলীর ছেলে মো. জালার উদ্দিন, সাবরাং ইউনিয়নের হারিয়াখারী এলাকার আব্দুল আমিনের ছেলে মিজানুর রহমান, হারিয়াখারী এলাকার আব্দু রশিদের ছেলে আজিজুল্লাহ, আব্দুল মাজিদের ছেলে আব্দুস সালাম, একই ইউনিয়নের লাফারঘোনা এলাকার মৃত কালু মিয়ার ছেলে নুরুল আলম, টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ এলাকার মৃত আব্দুল কাদের ছেলে মো. জালাল, একই এলাকার মৃত সেতাব্বরের ছেলে আবু তাহের।

ফেরত আসা বাংলাদেশিদের মধ্যে ২জনকে দেড় বছর করে এবং ১৪ জনকে ৬ মাস ও এক জেলেকে ৫ বছর ৯ মাস করে মিয়ানমার কারাগারে মানবেতর জীবনযাপন করেছেন বলে জানান তারা।

মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়নের নয়াপাড়া এলাকার আব্দুল আমিনের ছেলে মিজানুর রহমান জানান, 'তারা ছয় মাস আগে টেকনাফে শামলাপুর নৌ-ঘাট এলাকায় দিয়ে মাছ ধরার ট্রলার দিয়ে মালয়েশিয়া যাবার জন্য সমুদ্র পাড়ি দেয়। কিন্তু হঠাৎ করে ট্রলারটি নষ্ট হয়ে যায়। তিন দিন তারা সাগরে ভাসমান অবস্থায় থাকার পর ট্রলারটি মিয়ানমার সীমানায় পৌঁছলে মিয়ানমারের আইন-শৃঙ্খলাবাহনীর সদস্যরা তাদের আটক করে। তাদেরকে ক্যাম্পে নিয়ে প্রত্যেককে ছয় মাস করে সাজ প্রদান করে। পরে বাংলাদেশ সরকারের চেষ্টায় স্বদেশে ফেরত আসতে পেরেছি। এজন্য সরকার প্রধানকে ধন্যবাদ জানায়।

সিভয়েস/এএইচ

টেকনাফ প্রতিনিধি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়