Cvoice24.com


দেখতে চাইনি এমন দৃশ্য

প্রকাশিত: ১৪:০১, ৪ ডিসেম্বর ২০১৮
দেখতে চাইনি এমন দৃশ্য

আবির চক্রবর্তী

শৈশব-কৈশোরে শিক্ষকরা আমাকে পড়াতে আসতেন নিয়মিত, একজনের পর একজন। কোনদিন কামাই করতেন না টিউশনি। আমার তখন নাভিশ্বাস। কিন্তু কিছুই করার নেই। খেলার মাঠের বদলে টেবিলে মুখ গুঁজে বসে থাকার যন্ত্রণাটা টের পায়নি কেউ। ভালো বেতন দিতেন বাবা, মনের ভেতর কাজ করতো তীব্র প্রতিযোগিতা।

এখানেই লুকিয়ে থাকতো অনৈতিকতার চর্চা। বেতন বাড়াতে খুঁজে খুঁজে বের করা হতো দোষ-ত্রুটি। ১-১২ নম্বর প্রশ্নের মধ্যে যেকোনও ৮টি প্রশ্নের উত্তর লিখতে বলা হয়েছিল পরীক্ষায়। খাতায় ২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর লেখার পর সিরিয়াল ভেঙ্গে কেন ৫ নম্বর প্রশ্নের উত্তর এবং এরপর ৮ নম্বরটার উত্তর লিখে আবার ৬ নম্বর প্রশ্নের উত্তর লিখেছি-সেজন্য বাবার বকুনিও খেতে হয়েছে! কারণ সব প্রশ্নের উত্তরই তো মুখস্থ করিয়েছেন ‘তাঁরা’।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনায় হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়েছেন অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস। এমন দৃশ্য তো আমরা দেখতে চাই না। যাঁরা আমাদের শ্রদ্ধার আসনে আসীন, তাঁরা কেন এভাবে ক্ষমা চাইবেন! নিজের ভুলে এই শিক্ষক পুরো শিক্ষক সমাজকেই অপমান করলেন।

ব্যবসায়ী দিলীপ অধিকারীর মেয়ে অরিত্রি ২ ডিসেম্বর চলমান বার্ষিক পরীক্ষায় কক্ষে মুঠোফোন নিয়ে ঢুকেছিল। তাকে বের করে দেয়া হয়। এই অপরাধে তার মা-বাবাকে ডেকে এনে অপমানও করেছিলেন অধ্যক্ষ। সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ছাড়পত্র দেয়ার। তদবির চালিয়ে বাবা ব্যর্থ হলেন। অভিমানী মেয়েটা বাসায় এসে গলায় ফাঁস দিলো, নিজেকে শেষ করলো নিষ্ঠুর আচরণের প্রতিবাদে।

মা বিউটি অধিকারী আবারও বুকে-পেটে তীব্র ব্যথা পেয়েছেন, পাচ্ছেন প্রতিক্ষণ। অরিত্রিকে জন্ম দেয়ার সময়ও এমন ব্যথা হয়েছিল এই মায়ের।

 

 

আবির চক্রবর্তীর ফেসবুক টাইমলাইন থেকে নেয়া

সহ-সম্পাদক, দৈনিক পূর্বদেশ

 

-সিভয়েস/আরএইচ

সিভয়েস ডেস্ক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়