Cvoice24.com

ব্যয় ১ হাজার ২৫৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা
একনেকে চসিকের দুটি প্রকল্প অনুমোদন

প্রকাশিত: ১৭:০১, ৭ নভেম্বর ২০১৮
একনেকে চসিকের দুটি প্রকল্প অনুমোদন

ছবি : প্রতীকী

নগরীর বাড়ইপাড়া থেকে কর্ণফুলী পর্যন্ত নতুন খাল খনন এবং আধুনিক কসাইখানা নির্মাণ শীর্ষক দুটি  প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পেয়েছে। বহদ্দার হাট বাড়ই পাড়া থেকে  কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত (সংশোধিত) খাল খনন প্রকল্পের  প্রাক্কলিত ব্যয় ১ হাজার ২৫৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা, সর্বাধুনিক কসাইখানা নির্মানে ৮০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ চলতি বছরের জুলাই থেকে আগামী ২০২০ সনের জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। 
 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বুধবার (৭ নভেম্বর) শেরে বাংলা নগরে এনইসিতে একনেকের সভায় এ প্রকল্প দু’টি অনুমোদিত হয়। অনুষ্ঠিত একনেক সভায় চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা উপস্থিত ছিলেন। 

চসিক সুত্রে জানা গেছে, নগরীর বহদ্দারহাট বাড়ইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন প্রকল্পটি ২০১৪ সালের ২৪ জুন একনেকে অনুমোদন পেয়েছিল। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ এবং অর্থ ছাড় না হওয়ায় প্রকল্পের কাজ শুরু করা যায়নি। মেয়াদ চলে যাওয়ায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে প্রকল্পটি সংশোধিত হয়ে ১ হাজার ২৫৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে একনেক সভায় উপস্থাপন করা হয়। 

প্রকল্পের ডিপিপি সূত্রে জানা গেছে, নতুন খালটি নগরীর বহদ্দারহাট বাড়ইপাড়াস্থ চাক্তাই খাল থেকে শুরু করে শাহ আমানত রোড হয়ে নুর নগর হাউজিং সোসাইটির মাইজপাড়া দিয়ে পূর্ব বাকলিয়া হয়ে বলির হাটের পাশে কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে পড়বে। খালটির দৈর্ঘ্য হবে আনুমানিক ২ দশমিক ৯ কিলোমিটার এবং প্রশস্ত ৬৫ফুট। খালটির মাটি উত্তোলন, সংস্কার ও নতুন যোগাযোগ ব্যবস্থা সৃষ্টির লক্ষ্যে খালের উভয় পাশে ১৫ ফুট করে ২টি রাস্তা ও ৩ ফুট প্রশস্তের ফুটপাত নির্মাণ করা হবে।

চসিক সূত্রে আরো জানা গেছে, ২০১৪ সালে একনেকে অনুমোদনের সময় খাল খনন প্রকল্পটির প্রাথমিক  ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৮৯ কোটি ৪৪ লাখ ৪ হাজার টাকা। পরবর্তীতে ৩২৬ কোটি ৮৪ লাখ ৮১ হাজার টাকায় ২০১৫ সালে ১৩ আগষ্ট প্রকল্পটির প্রশাসনিক অনুমোদন দেয়। ওই সময় প্রকল্পের সময়সীমা ধরা হয়েছে ২০১৪ সালের ১ জুলাই থেকে ২০১৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। 

এদিকে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতেও প্রকল্পটির ব্যয় সংশোধন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল চসিক। ওই সময় প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৬১৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা। কিন্তু পরবর্তীতে পরিকল্পনা কমিশনের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রকল্পটি পুনরায় ব্যয় সংশোধন করে ৩৭৬ কোটি ১৩ লাখ টাকায় মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। পরে একই বছরের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভায় শর্ত দিয়ে প্রকল্প অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে ১ হাজার ২২৪ কোটি ১১ লাখ টাকায় আরডিপিপি তৈরি করা হয়, যা ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরন করা হয়েছিল। 

সর্বশেষ গত ১৮ জুলাই প্রকল্পটির ওপর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় একটি ‘পর্যলোচনা সভা’র আয়োজন করে। সভায় প্রকল্পটি ‘বাধা নেই’ মর্মে ঐক্যমতে পৌঁছান সংশ্লিষ্টরা। একই সঙ্গে প্রকল্পের ডিপিপিতে বিদ্যমান  প্রাক্কলিত ব্যয়ের সঙ্গে আরো তিন শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হয় ওই সভায়। ভবিষ্যতে ভূমির মূল্য বেড়ে গেলে প্রকল্প বাস্তবায়নে যাতে কোনো জটিলতা দেখা না দেয় তা মাথায় রেখেই এ ব্যয় বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হয়। এর প্রেক্ষিতেই প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ২৫৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা।

সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এই প্রকল্প বাস্তবায়নের অনুমোদন দেয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।  তিনি আগামীতেও বর্তমান সরকার পুনরায় নির্বাচিত হলে চট্টগ্রামের উন্নয়নের স্বার্থে আরো বড় প্রকল্প অনুমোদন দিবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

প্রকল্পের কার্যক্রম তুলে ধরে সিটি মেয়র জানান, প্রকল্পটির মাধ্যমে নতুন খাল খনন হলে পানির ধারন ক্ষমতা বাড়বে। এ এলাকার একটি  জলাবদ্ধতা সমস্যাও নিরসন হবে। এছাড়া শুরু থেকেই খালটি পরিচর্যা করা গেলে তার সুফল নগরবাসী পাবেন। খালটির দুই পাশে রাস্তা ও ফুটপাত  নির্মাণ করা হবে। নতুন যোগাযোগ ব্যবস্থা সৃষ্টি হবে। জনগণের ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার হবে। 

উল্লেখ্য, প্রকল্পের প্রধান অংশ ভুমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম শুরু হয়েছিল ২০১৫ সালের ১৮ অক্টোবর থেকে। ওইদিন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ভুমি অধিগ্রহণের অনাপত্তি ছাড়পত্রের আবেদন করেছিল চসিক। পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে ২০১৬ সালের ৩ জানুয়ারি জেলা প্রশাসনের কাছে ভুমি অধিগ্রহণ কার্যক্রমের জন্য পত্র দিয়েছিল চসিক। ওই সময় জেলা প্রশাসনের পক্ষে ভুমি অধিগ্রহণের জন্য সম্পূর্ণ অর্থ প্রদানের পরামর্শ দেওয়া হয় চসিককে। যাতে অধিগ্রহণ কার্যক্রম একসঙ্গে করা সম্ভব হয়।

-সিভয়েস/ইউডি/এসএ/এমইউ

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়