Cvoice24.com

চসিক মেয়রের বেধে দেয়া সময়সীমার দিন শেষ
'ইংরেজিতে পড়ছে কালি, সাইনবোর্ড হবে বাংলা বুলি'

প্রকাশিত: ১৫:৩১, ৫ নভেম্বর ২০১৮
'ইংরেজিতে পড়ছে কালি, সাইনবোর্ড হবে বাংলা বুলি'

চলতি বছরের ৬ মে রমজানে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা, নিয়মিত বাজার পরির্শন ও মনিটরিং, ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ ও নবায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে এক মত বিনিময় সভায় সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধিকে সাইনবোর্ড বাংলায় লেখার জন্য আগামী ৬ মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন। 

আজ ৫ নভেম্বর মেয়রের বেধে দেয়া সময়ের শেষ দিন। কিন্তু নির্দেশনার ছয় মাস সময় পেরিয়ে গেলেও নগরীর অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড এখনো ইংরেজি ভাষাতেই লেখা রয়ে গেছে। 

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর চসিক সম্মেলন কক্ষে নগর উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সভায় মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি ডা. মাহফুজুর রহমান ইংরেজি লেখা সাইনবোর্ড অপসারণের ব্যাপারে মহামান্য হাইকোর্টের রায়ের বিষয়টি মেয়রকে অবগত করেন। মেয়র নির্দেশনা বাস্তবায়নে নগরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেসি কাজ শুরু করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন। 

চসিক সূত্রে জানা গেছে, হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়নে সিটি কর্পোরেশন আজ (৫ নভেম্বর) থেকে ইংরেজী ভাষায় লেখা সাইনবোর্ড অপসারণে অভিযান শুরু করেছে। চসিক নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আফিয়া আখতার এবং স্পেশাল ম্যাজিষ্ট্রেট (যুগ্ম জেলা জজ) জাহানারা ফেরদৌসের নেতৃত্বে ইংরেজি ভাষায় লেখা সাইনবোর্ড অপসারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে নগরীর লাভলেইন থেকে কাজীর দেউড়ি মোড় পর্যন্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ইংরেজি ভাষায় লেখা ২৫টি সাইন বোর্ড কালো রং দিয়ে মুছে দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগামী ৩ দিনের মধ্যে বাংলা ভাষায় লেখা সাইন বোর্ড প্রতিস্থাপনের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। 

এ ব্যাপারে সিটি মেয়র বলেন, সাইনবোর্ড বাংলায় লেখার ব্যাপারে ছয় মাসের সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল। ওই সময় সবাইকে এ ব্যাপারে সচেতন করা এবং সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নানামুখী প্রচার-প্রচারণা করা হয়। তবে এখনো নগরীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইংরেজি ভাষায় লেখা সাইনবোর্ড টাঙানো রয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়নে ম্যাজিস্ট্রেসি কর্তৃক প্রাথমিকভাবে ভাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ইংরেজি লেখা সাইনবোর্ডের হরফ কালি দিয়ে মুছে দেয়া এবং ব্যবসায়ীদেরকে ৩ (তিন) দিনের মধ্যে বাংলা হরফে লেখা সাইনবোর্ড প্রতিস্থাপনের নির্দেশনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। 

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারিতে দেশের সব সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড, ব্যানার, গাড়ির নাম্বার প্লেট, দপ্তরের নামফলক বাংলায় লেখার নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ হাইকোর্ট। ২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ প্রদান করে কোর্ট। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ২৯ মে আন্তঃমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত এক সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভার মাধ্যমে এটি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সিদ্ধান্ত গৃহিত হলেও তা দীর্ঘদিন ধরে কাগজে-কলমেই আটকে রয়েছে। 

ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি’কে সামনে রেখে এ বছর জানুয়ারিতে সিটি করপোরেশনগুলোকে রিট পিটিশন আদেশ করে হাইকোর্ট। আদেশ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে অন্য ভাষায় লেখা সাইনবোর্ড অপসারণের ব্যাপারে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মে মাস থেকে বেশ কয়েকটি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে।  

চসিক সূত্রে আরো জানা গেছে, গত ৯ অক্টোবর থেকে নগরীতে ইংরেজিতে লেখা সাইনবোর্ড কালি দিয়ে দিয়ে মুছে দেয়ার কাজ শুরু হয়। এই ২৬ দিনে ২০টি'সহ আজকের আদালত পরিচালনায় আরো ২৫টি ইংরেজি ভাষায় লেখা মোট ৪৫টি সাইনবোর্ডের ইংরেজি হরফ কালি দিয়ে মুছে দেয়া হয়েছে। 

সিভয়েস/এস.আর 

উজ্জ্বল দত্ত 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়