Cvoice24.com


ময়ুখ চৌধুরী : বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কবি, গবেষক

প্রকাশিত: ১৩:৪৩, ২২ অক্টোবর ২০১৮
ময়ুখ চৌধুরী : বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কবি, গবেষক

ময়ুখ চৌধুরী ১৯৫০ সালের ২২ অক্টোবর, চট্টগ্রামের দক্ষিণ নালাপাড়া জন্মগ্রহণ করেন।  তাঁর ছেলেবেলা কাটে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর পাড়ে। সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন বা প্রবেশিকা (বর্তমানে মাধ্যমিক বা এসএসসি) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর লেখালেখি করবেন বলে কলা বিভাগে অধ্যয়ন করেন। এরপর চট্টগ্রাম কলেজ থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন এবং ১৯৭৩ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৭৮-৮৩ সালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

ময়ুখ চৌধুরী- একজন বাংলাদেশী কবি, সমালোচক, প্রাবন্ধিক, গবেষক এবং অধ্যাপক। তাঁর আসল নাম আনোয়ারুল আজিম। ময়ুখ চৌধুরী তাঁর ছদ্মনাম।

তিনি ১৯৮০-এর দশক থেকে সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে বোদ্ধােমহলের দৃষ্টি আর্কষণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তাঁকে বাংলা কবিতার তিরিশ দশকের ব্যক্তিবাদী ধারার উত্তরাধিকারী মনে করা হয়। তার কাব্যচর্চায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা ও সময়কালের প্রেক্ষাপট বিদ্যমান।

১৯৬৫ সালে ময়ুখ চৌধুরীর প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। ১৯৬৮ সালে সম্পাদনা করেন সাহিত্য কাগজ ‘প্রতীতি’; যার প্রচ্ছদ শিল্পীও ছিলেন তিনি। এরপর ১৯৭০ সালে ‘কবিতা’ নামে আরেকটি ছোটকাগজ প্রকাশ করেন। ১৯৭৩ সালে শিশির দত্ত সম্পাদিত ‘স্বনির্বাচিত’ কাগজে প্রথম লেখা ছাপা হয় এবং দৈনিক বাংলায় প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম প্রবন্ধ। এছাড়াও তিনি ছদ্মনামে প্রত্রিকায় গল্প ছেপেছেন। সত্তরের দশকে ‘প্রতীতি’ নামে একটি লিটলম্যগাজিনও প্রকাশ করেন ময়ুখ চৌধুরী।

তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ কালো বরফের প্রতিবেশী প্রকাশিত হয় ১৯৮৯ সালে এবং বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ‘পলাতক পেণ্ডুলাম’ প্রকাশিত হয় ২০১৫ সালে। ময়ুখ চৌধুরী কর্মজীবনে অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল আজিম নামে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে দীর্ঘ সময় ধরে অধ্যাপনা করছেন। তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক কবি তাসলিমা শিরীণের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

তিনি প্রধানত বাংলা সাহিত্য এবং কবিতা বিষয়ে গবেষণা করছেন। তিনি ড. অসিত কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে রবীন্দ্রকাব্য এবং ড. আবু হেনা মোস্তফা কামালের তত্ত্বাবধানে কবি শামসুর রাহমান বিষয়ে গবেষণা করেন। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপর গবেষণা অভিসন্দর্ভের শিরোনাম ছিল রবীন্দ্রনাথের পোয়েটিক ওরিয়েন্টেশন।

ময়ুখ চৌধুরীর প্রকাশিত গ্রন্থ - কাব্য : ১৯৮৯ কালো বরফের প্রতিবেশী; ১৯৯৯ অর্ধেক রয়েছি জলে, অর্ধেক জালে; ২০০০ তোমার জানলায় আমি জেগে আছি চন্দ্রমল্লিকা; ২০০১ প্যারিসের নীলরুটি; ২০০২ আমার আসতে একটু দেরি হতে পারে; ২০১৫ পলাতক পেণ্ডুলাম; ২০১৬ ক্যাঙ্গারুর বুকপকেট; ২০১৭ পিরামিড সংসার; এছাড়া চরণেরা হেটে যাচ্ছে মুণ্ডুহীন তাঁর অন্যতম সৃষ্টিকর্ম। ময়ুখ চৌধুরীর কাব্যসংকলন : ডান হাতের পাঁচটি আঙুল (২০১৬); উপন্যাস : খসড়া সম্পর্ক; গবেষণা : উনিশ শতকের নবচেতনা ও বাংলাকাব্যের গতিপ্রকৃতি (১৯৯৬); সম্পাদনা : অসভ্য শব্দ (১৯৭৩); সাহিত্যপত্র : প্রতীতি (১৯৬৮) ও কবিতা (১৯৭০);

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে তিনি কবিতায় অবদানের জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সাহিত্য পুরস্কার এবং একই বছর সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিসরূপ আবদুল করিম খান স্মৃতি পুরস্কার লাভ করেন। তাঁর সাহিত্যকর্মে নিজস্বধারার চমৎকার প্রভাব রয়েছে।

সিভয়েস/এস.আর

সিভয়েস ডেস্ক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়