Cvoice24.com


জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ২৭ আগস্ট ২০১৮
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। আমাদের জাতীয় জীবনে কবি নজরুলের কবিতা ও গানের গুরুত্ব অপরিসীম। শোষিত বঞ্চিত মানুষের মুক্তির বার্তা নিয়ে এসেছিলেন তিনি। মূলত তিনি বিদ্রোহী কবি বলে খ্যাত। তিনি একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ ও সৈনিক ছিলেন। প্রতিটি ক্ষেত্রে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে নজরুল ছিলেন সোচ্চার। তিনি ছিলেন বাঙালি মুসলমানের নবজাগরণের অগ্রদূত। নজরুলের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, সংগঠন নানা কর্মসূচি নিয়েছে। 

বাংলা ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (২৪ মে ১৮৯৯) বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে কাজী নজরুল ইসলাম জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম দুখু মিয়া। তার জীবন নানা বৈচিত্র্যে ভরপুর। স্থানীয় এক মসজিদে মুয়াজ্জিন হিসেবে কাজ করেন তিনি। যোগ দেন লেটোর দলে। শিশু বয়সেই মুখে মুখে তিনি কবিতা রচনা করতে পারতেন। রুটির দোকানেও কাজ করেন তিনি। তিনি অসংখ্য কবিতা, গান ও গল্প উপন্যাস রচনা করেন। তিনি স্কুলজীবন শেষ করার আগেই বাঙালি পল্টনে যোগ দেন। যুদ্ধ শেষ হলে কলকাতা ফিরে গিয়ে সাংবাদিকতা পেশা বেছে নেন। তার কলম থেকে আগুনঝরা লেখা বের হতো। এক সময় তিনি ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে অবতীর্ণ হন। এ সময় তিনি রচনা করেন ‘বিদ্রোহী’ ও ‘ভাঙার গান’ কবিতা। রচনা করেণ সাময়িকী ধূমকেতু। এক সময় তিনি বন্দী হন। জেলবন্দী অবস্থায় তিনি লেখেন রাজবন্দীর জবানবন্দী।

কাজী নজরুলের লেখনী জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আসছে। তার কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তার গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস। কাজী নজরুল ইসলাম নিজ গ্রামের মসজিদ ও স্কুলে অধ্যয়ন করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি কবিতা ও গান লেখা শুরু করেন। নিজে বিভিন্ন আসরে গান পরিবেশন করেন। তার কবিতা ক্রমে ব্রিটিশ রাজের শোষণের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদী ও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তার বিদ্রোহী কবিতায় সরাসরি ব্রিটিশ রাজকে সমালোচনা করা হয়। এ ছাড়া ভাঙ্গার গান, ধূমকেতুর মতো একই চেতনার কবিতা রচনা করেন কবি। তার বই নিষিদ্ধ করে ব্রিটিশ শাসকেরা। তিন হাজার গান রচনা করেন কাজী নজরুল ইসলাম। 

স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কবি নজরুলকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তার বসবাসের ব্যবস্থা করেন। ধানমন্ডিতে কবির বসবাসের জন্য একটি বাড়ি প্রদান করেন তিনি। 
তারও আগে, মধ্য বয়সে তিনি রোগাক্রান্ত হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। এতে সাহিত্য চর্চা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন তিনি। তার এই রোগ আর ভালো হয়নি। দীর্ঘকাল অসুস্থ থাকার পর কবি ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট (১২ ভাদ্র) ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে দাফন করা হয়। 

আজ সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে কবির সমাধিতে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচি পালন শুরু হবে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের পক্ষ থেকে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানো হবে। 
বাংলা একাডেমি দিবসটি উপলক্ষে দু’দিনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন, এবং ৩০ আগস্ট একক বক্তৃতা, আলোচনা ও সঙ্গীতানুষ্ঠান। একক বক্তৃতায় অংশ নেবেন ভীষ্মদেব চৌধুরী। নজরুল সঙ্গীত পরিবেশন করবেন ডালিয়া নওশীন। এ ছাড়া বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, শিশু একাডেমি, নজরুল একাডেমিসহ বিভিন্ন সংগঠন পৃথক কর্মসূচি নিয়ে দিবসটি পালন করবে। 

বিটিভি এবং বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো দবিসটিতে কবির ওপর অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে। জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলো কবির ওপর বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করবে। রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন স্থানে এ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।

সিভয়েস/এএইচ

সিভয়েস ডেস্ক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়