Cvoice24.com

ধ্বংস হচ্ছে প্রকৃতি ও জীব বৈচিত্র্য
পাহাড় কাটার মহোৎসব চলছে উখিয়ায়

প্রকাশিত: ০৭:০৭, ২৯ নভেম্বর ২০১৮
পাহাড় কাটার মহোৎসব চলছে উখিয়ায়

উখিয়ার থাইংখালী মনারঘোনায় এভাবে নির্বিচারে পাহাড় কাটা হচ্ছে। ছবি : প্রতিনিধি

খাল, নদী, পাহাড় ও উর্বর কৃষিজমি বেষ্টিত উখিয়ায় পাহাড় কাটার মহোৎসব কোনভাবেই থামানো যাচ্ছে না। রোহিঙ্গা জনগোষ্টীর মানবিক সেবায় নিয়োজিত এনজিও সংস্থার বিশাল চাহিদাকে পুঁজি করে এলাকার এক শ্রেণির পেশাদার পাহাড় খেকোর দল নির্বিচারে পাহাড়ের মাটি পাচার করে কাড়িকাড়ি টাকা আদায় করছে। এতে ধ্বংস হচ্ছে প্রকৃতি, জীব বৈচিত্র্য, পশুপ্রাণী ও পরিবেশ।

বুধবার (২৮ নভেম্বর) সকালে বন বিভাগ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট যৌথ অভিযান চালিয়ে পাহাড় কাটা মাটিভর্তি গাড়ি জব্দ করে। এসময় অবৈধভাবে পাহাড় কাটার অভিযোগে মোবাইল কোর্ট রামু জোওয়ারিয়া নালা গ্রামের এজাহার মিয়ার ছেলে মো. রফিক (৪০) কে পাহাড় কাটা আইন ৬ এর (খ) ধারায় ১ মাসের সাজা প্রদান করেছে।

২৫ আগস্টের পরে মিয়ানমার থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়ন ও পালংখালী ইউনিয়নের ৫ হাজার একর বনভূমিতে আশ্রয় নেয়।

প্রধানমন্ত্রীর মানবিক দিক নির্দেশনায় আশ্রিত এসব রোহিঙ্গাদের মানবিক সেবায় এগিয়ে আসে প্রায় ২ শতাধিক এনজিও। তাদের কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে এবং রোহিঙ্গাদের আশ্রয়স্থল নির্মাণের জন্য প্রয়োজনের তাগিদে কিছু কিছু পাহাড় কেটে সমতল করা হয়েছিল। এ সুযোগের সৎ ব্যবহার করে স্থানীয় একটি সংঘবদ্ধ চক্র পাহাড় কেটে মাটি পাচার শুরু করে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল থাইংখালী ময়নারঘোনা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ২০/২৫ জন রোহিঙ্গা শ্রমিক পাহাড় কেটে গাড়িতে মাটিভর্তি করছে। এসময় স্থানীয় সাংবাদিক দেখে রোহিঙ্গারা কাজ বন্ধ করে দেয়। জানতে চাওয়া হলে ময়নারঘোনা ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গা শ্রমিক অজিউল্লাহ (৪০), ছালামত উল্লাহ (৩৫), নুর মোহাম্মদসহ আরো বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা জানান, তারা ছৈয়দ নুরের নির্দেশে পাহাড় কাটার কাজ করছে। 

এসময় শ্রমিক মাঝি শামশুল আলম (৩৫) জানান, এখানে প্রতিদিন থাইংখালী বিট কর্মকর্তা এসে ছৈয়দ নুরের সাথে কথা বলে চলে যায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী রোহিঙ্গা জানান, ছৈয়দ নুরের সাথে বিট কর্মকর্তার দৈনিক লেনদেন হওয়ার কারণে প্রকাশ্যে দিবালোকে বন ভূমির পাহাড় কাটারমত জঘন্য অপরাধ চলছে। 

তবে টাকা লেনদেনের কথা অস্বীকার করে থাইংখালী বনবিট কর্মকর্তা মঞ্জুরুল মোরশেদ সিভয়েসকে জানান, তারা এনজিও সংস্থার নির্দেশে মাটি সরবরাহ করছে। বাধা দিলেও শুনেনা। উখিয়া সহকারী বন সংরক্ষক কাজী তারিকুর রহমানের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, এলাকার কিছু লোক এনজিওর দোহায় দিয়ে পাহাড় কেটে মাটি পাচার অব্যাহত রেখেছে। তিনি বলেন, সহকারী কমিশনার ভূমির সহযোগিতায় পাহাড় কাটা যে কোন উপায়ে বন্ধ করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।

সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফখরুল ইসলাম জানান, পাহাড় কাটার ফলে প্রকৃতি ধ্বংসের পাশাপাশি জীব বৈচিত্র্য বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। যা কোন দিন পূরণ হওয়ার নয়। 

তিনি এ ব্যাপারে স্থানীয় সাংবাদিকদের তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান।

-সিভয়েস/এসএইচ
 

আবদুল্লাহ আল আজিজ, উখিয়া

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়