Cvoice24.com


আগামীর বাংলাদেশ, Are you Ready?

প্রকাশিত: ১৫:১১, ২৬ অক্টোবর ২০১৮
আগামীর বাংলাদেশ, Are you Ready?

ফাইল ছবি

চায়নিজরা একসময়ে হাঁটতো, তারপর তারা বাইসাইকেল চালানো শুরু করলো, তারপরে মোটর সাইকেল! এবং তারপরে?

চাইনিজরা এখন কার চালায় এবং দামী সব ব্রান্ডের কার। কোটি কোটি কার।

দুনিয়ার উন্নয়নকে চক্ষু দিয়ে দেখলে এমনই দেখা যায়।

দেশে লোকাল বাস আর লঞ্চের দাপট চলেছে ৩ দশকের বেশি। এরপরে সমাজের অল্প কিছু মানুষ গাড়ি কেনা শুরু করলো। মোটামুটি ঘুষের টাকা, প্রজেক্টের টাকা আর ব্যাংকের টাকা যারা মারতে পেরেছে, তারাই কার কিনেছে এক সময়। শ্রেণি বিভাজন খুব বেশি ছিলো।

হঠাত বাইসাইকেলের একটা ক্রেজ গড়ে উঠলো। কিন্তু এই ক্রেজটা বেশ দেরিতে এসেছে বাংলাদেশে। কারণ ততোদিনে দেশের অর্থনীতি ধীরে ধীরে বিশাল হওয়া শুরু করেছে। বিশাল বিশাল মেগা প্রজেক্টের টাকার প্রবাহ ছড়িয়ে পড়ছে। দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি পালটে যেতে লাগলো।

ঘটনাটা আসলে ঘটিয়েছে প্রধানত বিদ্যুৎ। বিদ্যুতে উৎপাদন বেড়ে গেছে ৭০০% এর বেশি। তারপরে রফতানি বেড়েছে ৩০০% এবং তা বাড়তেই থাকবে। ১২ বিলিয়ন থেকে আমাদের এক্সপোর্ট ৪২ বিলিয়নে পৌঁছে যায়।

যে দেশের এক্সপোর্ট ৩০০% বেড়ে যায়, সেখানে সবচেয়ে নিঃস্ব মানুষের পকেটেও কিছু টাকা আসবে। তরুণদের জন্য তা বিপুল সুযোগ তৈরি করেছে।

ঢাকা শহর এখন মোটর সাইকেলের শহর! সারা বাংলাদেশেই মোটর সাইকেলের ঢেউ লেগেছে। ১ থেকে দেড় লাখ টাকার মোটর সাইকেল কেনা এখন ডালভাতের ব্যাপার। আগামীতে বছরে ১০ লাখ মোটর সাইকেল লাগবে!

কত টাকার ব্যবসা? প্রতিটা ১ লাখ টাকা ধরলেও ১০ লক্ষ কোটি টাকা!

বাজারে মোটামুটি যদি ১ কোটি মোটর সাইকেল হয়, তারপর দাম কত? ১০০ লক্ষ কোটি টাকা। এগুলা চলবে কারা? মানুষ!

আর মানুষ ১ লাখ টাকার মোটর সাইকেল থেকে কত লাখ টাকা রিটার্ন পাবে? সেই হিসাব!

মাথা খারাপের হিসাব। থাক–

এবার চলুন দেখি পাল্লা দিয়ে বিদ্যুৎ কী দিচ্ছে - সক্ষমতা ৭০০% বৃদ্ধি পেয়েছে ২০০৬ এর তুলনায়। ৭০০%? ভুয়া গল্প নাতো? না, এটা ভুয়া গল্প নয়। ৭গুণ মানে ৭০০% সক্ষমতা বেড়েছে।

এবং বিদ্যুৎ আরও আসতেছে। আপনার কারখানা, ব্যবসা চালাতে কত বিদ্যুৎ লাগবে? যা লাগবে, তাই পাবেন। ঢাকা শহরে ২০০১-১২ সাল পর্যন্ত মোটামুটি ১২ ঘণ্টা লোড শেডিং চলতো। চাহিদা বেড়েছে ২০ গুণেরও বেশি। অথচ লোড শেডিং নাই! মানুষ এখন ফ্যানের চেয়ে এসি কিনছে বেশি। অথচ লোড শেডিং নাই!

আর বাঙ্গালি যদি বিদ্যুৎ পায়, তাকে আপনি আর দাবাইয়া রাখতে পারবেন না। সে তার ইনোভেশন দিয়ে ইতোমধ্যেই বিস্ময়কর ৪২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে গেছে।

সেই দেশ ১০০ বিলিয়ন ডলারে যেতে বেশি সময় নিবে না। ১৪ বিলিয়ন থেকে ৪২ বিলিয়নে যেতে ১২ বছরে লেগেছে,সেখানে ১০০ বিলিয়নে এতে আর ৬/৭ বছরের বেশি লাগবে না।

সরকার তলে তলে টেম্পো ভালো চালিয়েছে যাতে আপনি কার চালাতে পারেন!

বিশাল বিশাল মেগা প্রজেক্ট চলছে। জানি না, এত বড় সাহস বা বুকের পাটা কীভাবে হলো বাংলাদেশ সরকারের।

এই তো সেদিনকার কথা– যখন বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স সেন্টারের জন্য ৯৬০ কোটি টাকা বাজেট হলো ৯৭-৯৮ এর দিকে, তখন সবাই বললো, এতো গরিবের ঘোড়া রোগ! সেই সময়ের বিরোধী দলের মহাসচিব এই প্রজেক্ট বন্ধ করতে বিশাল শোরগোল পাকিয়েছিলেন!
ভাবতে কেমন লাগে? মাত্র ৯৬০ কোটি টাকার প্রজেক্টের সাহসও করতে পারতো না বাংলাদেশ!

কলিজাটা কত বড় হতে হয় যে আপনি ৫০ হাজার কোটি টাকার বাৎসরিক বাজেটকে ৫ লাখ কোটি টাকায় নিয়ে যাবেন?

বাংলাদেশের কলিজার সাইজ দেখেছেন? কত্ত বড় দুঃসাহস!

শুধু কি তাই? কেউ কি ভেবেছিলো ৩ হাজারের বিদ্যুৎ ২০ হাজারে নিয়ে যাবে? এটা শুধু কল্পনায় সম্ভব! 

কিন্তু তাও ঘটিয়েছে বাংলাদেশ। 

পায়রা বন্ধর, ঢাকা খুলনা এক্সপ্রেস হাইওয়ে, এলিভেটেস এক্সপ্রেস, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্প, বুলেট ট্রেন, ঢাকার চারাপাশে ঘিরে সার্কুলার ট্রেন– এসব ৫০-৯০ হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট। এক একটা প্রজেক্ট দেড় দশক আগে বাংলাদেশের বাজেটের চেয়েও বড়!ওরে বাপরে বাপ!!

পদ্মাসেতু সহ এসব মেগা প্রজেক্ট শেষ হলে কী হবে? চোখ বন্ধ করে একবার ভাবুন কী হচ্ছে এখনই, কী হবে এবং সেই মহাসুযোগ থেকে আপনি নিজে কী কতটা নিতে পারেন।

পদ্মাসেতুর সাহসটাই আসলে আমাদের সাহসের আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। কবি গুরুর সেই গানের মতো, “সে আগুণ ছড়িয়ে গেলো সব খানে সব খানে”।

বাংলাদেশে পদ্মাসেতু নির্মাণের সেই সাহসের ঢেউ আসলে পৌঁছে গেছে প্রতিটা নাগরিকের রন্ধ্রে, রন্ধ্রে।

কে ঠেকাবে আমাদের? 

যে অসীম সাহস আমাদের বুকে, সেখানে কোন রাষ্ট্রদূত আমাদের ধমক দিবে? অথচ এদের ধমক ধামকে একটি স্বাধীন দেশের মানুষ কীভাবে তটস্থ থাকতাম।
আজ তা ইতিহাস।

এখন সময় শুধুই এগিয়ে চলার। আমাদের সামনে এখন বহুমুখী সুযোগ। যারা নিচ্ছে তারা এগিয়ে যাচ্ছে। যারা রেডি হচ্ছে, তারা সব পাবে। যারা রেডি হচ্ছে না, তারা পস্তাবে।

সারাদিন ফেসবুকে যেইসব দুর্বৃত্তরা দেশের বদনাম করে, অথচ দেশের বিপুল সম্ভাবনার কথা অন্যদের না জানিয়ে নিজেরা ঠিকই নেয়ার ধান্ধায় থাকে, সেইসব দুর্বৃত্ত্বশ্রেণির মুখে ছাই দিয়ে বাংলাদেশে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে এগিয়ে যাবে।

আমাদের একটাই অসমাপ্ত লড়াই বাকি আছে। সেটি হলো দুর্নীতি আর দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে লড়াই। সেই অসমাপ্ত লড়াই শুরু হলে দেশ আগাবে আরও দ্রুত গতিতে। 
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অদম্য অগ্রগতিতে
এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, এগিয়ে যাবেই বাংলাদেশ।

(জিয়াউল হক মীর’র ফেসবুক থেকে নেয়া)

-সিভয়েস/এমআইএম/এমইউ

ফেসবুক ডেস্ক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়